২০০৫ সাল থেকে ইউনিসেফ এ পুরস্কার দিচ্ছে।
Published : 06 Dec 2022, 07:57 PM
শিশু অধিকার নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য সপ্তদশ ‘ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস’ পেয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হিমু চন্দ্র শীল এবং শিশু সাংবাদিকতার সাইট ‘হ্যালো’র শিশু সাংবাদিক ধী অরনী পাল।
এছাড়া আরও ৯ বাংলাদেশি সাংবাদিককে এবার পুরস্কৃত করেছে ইউনিসেফ; সংস্থাটি ২০০৫ সাল থেকে ‘শিশু অধিকার বিষয়ক’ প্রতিবেদনের উৎকর্ষের স্বীকৃতি দিতে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এতে ‘পথই যাদের ঠিকানা’ শীর্ষক ছবির জন্য ফটো সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে (অনুর্ধ্ব-১৮) পুরস্কার পেয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত শিশু সাংবাদিকদের ওয়েবসাইট ‘হ্যালো’র ধী অরণী পাল। পুরস্কার হিসেবে তিনি ৫০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ পেয়েছেন।
এছাড়াও শিশু-কিশোরদের জন্য বিশ্বের প্রথম বাংলা সাইট কিডজ ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে লেখা ‘রোহিঙ্গা শিশু আয়াত উল্লার দিনরাত্রি’ প্রতিবেদনের জন্য প্রিন্ট সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছেন হিমু চন্দ্র শীল। সেরা প্রতিবেদনের জন্য তিনি এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ পেয়েছেন।
জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত প্রিন্ট, ফটো ও ভিডিও সাংবাদিকদের জমা দেওয়া প্রায় ৩০০ প্রতিবেদন থেকে একটি স্বাধীন বিচারক প্যানেল বিজয়ী প্রতিবেদনগুলো নির্বাচন করেছেন।
এসব প্রতিবেদনে শিশু অধিকার বিষয়ক কথা যেমন- যাদের জোরপূর্বক বিয়ে ও কঠোর পরিশ্রমে বাধ্য করা হয়, সেসব মেয়েদের কথা; যাদের বিশুদ্ধ পানির অভাবে ঋতুস্রাব ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার জন্য সংগ্রাম করতে হয়, তাদের কথা; যাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল রাস্তা এবং যেসব শিশুরা জলবায়ু অভিঘাতে নিপীড়িত ও কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে যাদের জীবন ব্যাহত হয়েছে, তাদের কথা উঠে এসেছে।
ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২২- এর বিজয়ীরা হলেন (১৮ বছর ও তদুর্ধ্ব) - প্রিন্ট সাংবাদিকতায় কালের কণ্ঠের এমরান হাসান সোহেল, নিউজবাংলার জেসমিন আক্তার পাপড়ি, ঢাকা ট্রিবিউনের নওয়াজ ফারহিন অন্তরা, ঢাকা পোস্টের তানভীরুল ইসলাম।
ভিডিও সাংবাদিকতায় পুরস্কার পেয়েছেন নাগরিক টিভির শাহনাজ শারমিন। ফটো সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন প্রথম আলোর মো. সাজিদ হোসেন এবং জাহিদুল করিম।
এছাড়াও ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু সাংবাদিকদেরও পুরস্কৃত করা হয়েছে।
প্রিন্ট সাংবাদিকতায় (অনূর্ধ-১৮) ক্যাটাগরিতে জাগো নিউজের মোহাম্মদ মোশারফ হোসাইন এবং ভিডিও ক্যাটাগরিতে (অনূর্ধ্ব-১৮) এটিএন বাংলার খালিদুল ইসলাম পুরস্কার জিতেছেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “আজ আমরা শক্তিশালী যেসব প্রতিবেদনকে সম্মান জানাচ্ছি সেগুলো শিশু অধিকারের কথা সবার সামনে তুলে ধরতে এবং ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সাংবাদিকরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তারই প্রতিফলন।
“তিক্ত বঞ্চনার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি এগুলোতে উঠে এসেছে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে প্রতিদিনের বিজয়ের গল্পগুলোও, যা আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।”
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি ও ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন শিশু অধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনের মাধ্যমে শিশুদের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের শিশুরা কেমন আছে, তাদের সার্বিক অবস্থা সাংবাদিকরাই তাদের লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন। গণমাধ্যমকর্মীদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে, শিশু অধিকার নিয়ে ভবিষ্যতে আরও বেশি বেশি কাজ করতে হবে।”
এ বছরের একজন বিচারক রয়টার্স বাংলাদেশের চিফ করেসপন্ডেন্ট রুমা পাল বলেন, “আমরা এই বছর শক্তিশালী কিছু প্রতিবেদন দেখেছি। আগামী দিন, সপ্তাহ ও মাসগুলোতে নৈতিকতার সর্বোচ্চ মানদণ্ডে সংবেদনশীল, সহানুভূতিশীল রিপোর্টিংয়ের উচ্চ মান বজায় রাখতে হবে।
“নৈতিকতা ও সংবেদনশীলতা ভালো প্রতিবেদনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এবং গল্প যত আকর্ষণীয় হয়, এই বিষয়ের গুরুত্বও তত বেশি।”
এবারের ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডে বিচারক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, এএফপি’র ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম এবং রয়টার্স বাংলাদেশের সাবেক ব্যুরো চিফ সিরাজুল ইসলাম কাদির,
আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার আলোকচিত্রী ও প্রশিক্ষক আবির আবদুল্লাহ, আলোকচিত্রী জান্নাতুল মাওয়া, রয়টার্স বাংলাদেশের মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট রফিকুর রহমান।