সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা এখন থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে হাসপাতালে বসেই ব্যক্তিগত রোগী দেখতে পারবেন; যে কার্যক্রম শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে।
একজন চিকিৎসক সপ্তাহে দুদিন বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে রোগী দেখতে পারবেন।
সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে দেশের ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলা হাসপাতালে এ সেবা মিলবে। পরে বাকি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে এ সেবা দেওয়া হবে।
এদিন সচিবালয়ে ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নীতিমালা ২০২৩’ সংক্রান্ত সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, বৈকালিক এ সেবায় একজন রোগী কোনো অধ্যাপকের পরামর্শ নিলে ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া সিনিয়র কনসালটেন্ট ৪০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের চিকিৎসক ৩০০ টাকা দিতে হবে। রোগী দেখায় চিকিৎসককে সহায়তা করবেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নার্সরা। রোগী যে ফি দেবেন, তা থেকে চিকিৎসককে সহায়তাকারী নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পাবেন ৫০ টাকা। বাকি ৫০ টাকা হাসপাতাল রাখবে। রোগীর কাছ থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ফি আদায় করবে হাসপাতাল, চিকিৎসকরা মাস শেষে তাদের পাওনা টাকা পাবেন।
“৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস চালু করার চেষ্টা করছি। নার্স ও টেকনিশিয়ানরাও সপ্তাহে দুদিন করে কাজ করবেন। এছাড়া বৈকালিক সেবা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি ও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কেন বাড়ছে তা নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। দেশের সব বিভাগে গিয়ে জেলা, উপজেলা হাসপাতালে সেবার মান যাচাই করা হয়েছে। বিএমএ, স্বাচিপসহ সবার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সব বিষয় মিলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই বৈকালিক ইনস্টিউশনাল প্রাকটিস আপাতত ছোট আকারে শুরু করা হচ্ছে।
বর্তমানে সরকারের বেতনভুক্ত চিকিৎসকরা তার কর্ম সময়ের বাইরে ব্যক্তিগতভাবে রোগী দেখার সুযোগ পান। তারা বেসরকারি হাসপাতালগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তিগত চেম্বার বসিয়ে ফির বিনিময়ে রোগী দেখে থাকেন।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএসএমএমইউ) প্রথম হাসপাতালেই চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত রোগী দেখার সুযোগ করে দেয়। স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানের পর বেসরকারি বারডেমও একই পথ অনুসরণ করে।
এখন সরকারি হাসপাতালেও একই ধারা চালু করতে চাইছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ হাসপাতালে সকালে রোগী দেখার পর বিকালে চিকিৎসকরা ফি নিয়ে রোগী দেখবেন।
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. টিটো মিঞা, বিএমএর মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক কামরুল হাসান মিলন উপস্থিত ছিলেন।