“রাস্তায় পুলিশ চাঁদাবাজি করে, শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হয়, বাজারে চাঁদাবাজি হয়, সব জায়গায় চাঁদাবাজি হয়।”
Published : 28 Feb 2024, 07:12 PM
রাস্তায় পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধ না করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে এই চাঁদাবাজি একটি বড় কারণ।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে বুধবার দুপুরে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত মত বিনিময়ে এ কথা বলা হয়।
মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে সেই আলোচনায় কারওয়ানবাজার পাইকারি কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজন চৌধুরী বলেন, “ড্রাইভাররা আমাদের সাথে শেয়ার করে, মাল আনার সময় পথে পথে চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদা দেওয়ার জন্যই পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
“পরে সরবরাহকারীরা পাইকারি বাজারে মাল একটু বেশি দামে দেয়। এরপর পাইকারি দোকানির কাছ থেকে খুচরা দোকানিরা যে দামে কিনে তার চেয়েও অধিক লাভ করে। এভাবেই ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়ে যায়।”
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ মো. বখতিয়ারও সড়কে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ তোলেন।
তিনি বলেন, “রাস্তায় পুলিশ চাঁদাবাজি করে, শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হয়, বাজারে চাঁদাবাজি হয়, সব জায়গায় চাঁদাবাজি হয়। এই চাঁদাবাজি বন্ধ না করলে দ্রব্যমূল্য কমানো সম্ভব না।”
সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, “আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা হচ্ছে সরবরাহ চেইন। আমার মাল যেটা বিদেশ থেকে আসবে, সেটা যেন ঠিকভাবে সারাদেশে সমানভাবে পৌঁছায়। যদি না পৌঁছায় তাহলে কৃত্রিম সংকট তৈরি হবে। আমার মূল বক্তব্য একটাই। কেউ যেন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে।”
পাইকারির তুলনায় চেয়ে খুচরা পর্যায়ে মুনাফা অনেক বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা নজর রাখবেন কেউ যেন অতি মুনাফা করতে না পারে।”
রোজার শুরুতে চাহিদা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম বাড়ে জানিয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “ক্রেতাদের অনুরোধ করব যতটুকু প্রয়োজন তার অতিরিক্ত ক্রয় না করার জন্য। সবাই সীমিত কেনাকাটা করলে দাম বাড়ার সুযোগ নেই।
“দাম বাড়ায় সামর্থ্যবানেরা। দিনে এনে দিনে খায় এমন লোকদের কারণে দাম বাড়ে না। সামর্থ্যবানেরা বেশি বেশি কিনে ফ্রিজে রাখে। তাই রমজানের শুরুতে দাম বাড়ে।”
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমরা যদি একজনের দোষ আরেকজনের উপরে চাপিয়ে দেই তাহলে তো হবে না। আমরা ঠিকভাবে এলসি পাচ্ছি না, বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ডলারে সমস্যা হচ্ছে। আর ডিউটি (শুল্ক) বেড়ে গেছে অনেক। এক কোটির পণ্যে ডিউটি যদি ৫০ লাখ টাকা হয়, তাহলে এ ব্যবসা করব কীভাবে?”
তিনি বলেন, “কিছু কিছু খেজুর কিনে এনেছি ১২০ টাকায়, আর ডিউটি দিতে হচ্ছে ২১০ টাকা। আমি যদি দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ ডিউটি দেই, তাহলে কেনা দামের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই তো দাম বেড়ে যাবে। এবার খেজুরের দাম গতবারের তুলনায় অনেক বেড়েছে শুধু এই ডিউটি বাড়ার কারণে।”
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি মো. খায়রুল হুদা চপল, মো. আনোয়ার সাদাত সরকার, মো. মনির হোসেন, পরিচালক হারুন ইসহাকুল ইসলাম সুইটও মতবিনিময়ে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:
শরীয়তপুরে গাড়িতে ‘চাঁদাবাজি’, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি: বিক্ষোভের পর দুই কর্মকর্তা প্রত্যাহার