শরীয়তপুরে গাড়িতে ‘চাঁদাবাজি’, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট বাস-স্ট্যান্ডে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি চক্রের বিরুদ্ধে।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2021, 03:49 PM
Updated : 20 July 2021, 03:49 PM

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় অবরোধ দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তারা চাঁদা তোলে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

থানা ও উপজেলা প্রসাসন চাঁদা আদায়ের কথা সরাসরি স্বীকার না করলেও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, কুমিল্লাসহ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সড়ক পথে যোগাযোগের সংক্ষিপ্ত এই পথে ব্যবসায়ীরা মালামাল পরিবহনে গোসাইরহাট-সখিপুর-চাঁদপুর সড়কটি ব্যবহার করেন।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ মালবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও মালবাহী অন্যান্য গাড়ি চলাচল করে।

স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল, শাহেদ আহম্মেদ বাবু ডাকুয়াসহ বেশ কয়েকজন বলেন, গোসাইরহাট-সখিপুর-চাঁদপুর সড়কের গোসাইরহাট বাস-স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজরা প্রতিদিন প্রতিটি মালবাহী ট্রাক থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা ও পিকআপ ভ্যান থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা গোসাইরহাট পৌরসভার নাম করে চাঁদা আদায় করছে।

এই রুটের মালবাহী ট্রাক চালক মো. আবু বকর ও ইউনুচ মিয়া বলেন, চাঁদাবাজরা ৫০ টাকার রশিদ ধরিয়ে দিয়ে প্রতিটি মালবাহী ট্রাক থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রতিদিন এই রুটে শতাধিক মালবাহী গাড়ি চলাচল করছে। চাঁদাবাজরা এসব মালবাহী গাড়ি থেকে প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে।

মালবাহী ট্রাক চালক রশিদ মিয়া বলেন, “এসব গাড়ি থেকে গোসাইরহাটের কোথাও মালামাল ওঠানামা হয় না। তারপরও পৌর ট্যাক্সের নামে রশিদ দিয়ে চাঁদা আদায় করছে এসব চাঁদাবাজরা। ফলে এ ব্যাপারে গাড়ির চালকসহ সাধারণ জনগণও মুখ খুলতে সাহস পচ্ছে না।”

চাঁদাবাজরা প্রশাসনের দোহাই দিয়ে এই চাঁদার টাকা ওঠাচ্ছে বলে তার অভিযোগ।

জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, যেসব দূরবগামী মালামাল বহনকারী যানবাহন পৌরসভার মধ্যে তাদের মালামাল ওঠানামা করবে না তাদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায়ের পৌরসভার কোনো বিধান নেই।

গোসাইরহাট পৌরসভার বাসিন্দা উজ্জ্বল ডাকুয়া, শফিক সরদার, মিজান রাঢ়ী, রাসেল রাঢ়ী ও রুবেল সরদার বলেন, গত বছর গোসাইরহাট পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দরপত্রের মাধ্যমে ডাক এনে রাস্তায় এরকম মালবাহী গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করার অপরাধে তাদের নামে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে এবং তারা জেল হেজতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন।

তাহলে এবছর এভাবে রাস্তায় প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় হচ্ছে কীভাবে? প্রশ্ন তাদের।

গোসাইরহাট থানার ওসি মোল্লা সোহেব আলী বলেন, “ঈদের সময় এলোমেলোভাবে কেউ কিছু করতাছে কিনা জানি না। তবে কেউ অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা নেব। ছয় মাস আগে এই চাঁদাবাজি করার কারণে আমরা মামলা নিয়েছি এবং তাদের জেলেও পাঠিয়েছিলাম।”

গোসাইরহাট পৌরসভার প্রশাসক ও গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, গোসাইরহাট পৌরসভার মধ্যে যেসব মালবাহী ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান মালামাল ওঠানামা করবে, শুধু তাদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায়ের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে।

“এছাড়া অন্য যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”