ধর্মমন্ত্রী জানান, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিন লাখ মসজিদের প্রায় ৭ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিনের ভাতা দেয়া আপাতত সম্ভব নয়।
Published : 13 Feb 2024, 06:11 PM
ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে মশিউর রহমান মোল্লা সজলের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি।
“সৌদি আরবে মক্কা ও মদিনায় অনেক এলাকায় বাড়ি ও হোটেল ভেঙ্গে ফেলায় বাড়ি ভাড়া ব্যয় এ বছর অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক নানা কারণে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মিনা, আরাফায় তাঁবু ভাড়াসহ মেয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সকল কারণে সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় আর কমানো সম্ভব হয়নি।”
মন্ত্রী বলেন, “২০২৪ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। বিগত বছরগুলোর মত ২০২৪ সালেও যাতে পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী হজে যেতে পারে সেজন্য ২০২৩ সালের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কময়ে ২০২৪ সালে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা মূল্যের সাধারণ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।”
“অধিক সুযোগ সুবিধা আশা করেন এই রকম হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি মাধ্যমের বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।”
এর আগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের প্রশ্নে ধর্মমন্ত্রী জানান, সারাদেশে প্রায় তিন লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বৃহৎ জনবলের ভাতা দেয়া আপাতত সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
আরেক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা ও হাজীদের সেবা প্রদানের দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন টীমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। বাংলাদেশি হাজীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য পরিচালিত হয় মেডিকেল সেন্টার ও ক্লিনিক।
মিনা-আরাফা মুজদালিফা-জামারা এবং মক্কা ও মদিনায় হাজীদের সেবার জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা (হজ প্রতিনিধি টিম, হজ প্রশাসনিক টিম, হজ মেডিকেল টিম, হজ কারিগরি টিম এবং হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী) সৌদি আরব যান।
সরকারি টাকায় হজ করতে তাদেরকে পাঠানো হয় না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের বয়স্ক হাজীদের চিকিৎসা সেবাসহ সকল ক্ষেত্রে টিমের সদস্যরা হাজীদের যথাযথ খেদমত করে থাকেন। দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়।”
দেশে মোট নদী ১০০৮টি
চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট নদীর সংখ্যা ১০০৮টি।
জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রবহমান নদী রয়েছে ৯৩১টি। নাব্যতা হারিয়েছে এমন নদীর সংখ্যা ৩০৮টি।
নাব্যতা হারানো নদীর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮৫টি, রংপুর বিভাগে ৭১টি, রাজশাহী বিভাগে ১৮টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১টি, সিলেট বিভাগে ১০টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬টি ও খুলনা বিভাগে ৮৭টি।
৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদন হয়
ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ এখন দেশেই উৎপাদিত হয়। বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রায় সব ওষুধই রপ্তানি করা হচ্ছে।
“দেশে উৎপাদিত ওষুধ বিদেশে রপ্তানিতে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে চলতি বছর ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।”
আনোয়ার খানের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে প্রায় ৫৯০০ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯০৩ টাকার ওষুধ রপ্তানি করা হয়েছে।
মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রায় ৩২ প্রকারের ওষুধ ও সরকারি হাসপাতালকে ১০৫ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্য সরবরাহ করা হচ্ছে।