প্রকল্প পরিচালক বলছেন, “বনানী ও মহাখালী র্যাম্প এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। আপাতত র্যাম্প দুটি খুলছে না।”
Published : 31 Aug 2023, 01:12 AM
ঢাকা বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা থেকে ফার্মগেইট পর্যন্ত ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের ১৫টি র্যাম্পের মধ্যে রোববার যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে ১৩টি।
নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়া এই পথের বনানী ও মহাখালী র্যাম্প এখনই চালু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখওয়াত আকতার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন। পরদিন থেকে চলবে গণপরিবহন। ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটারের এ পথের ১৫টি র্যাম্প মিলিয়ে মোট দৈর্ঘ্য ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটার।
প্রকল্প পরিচালক শাখওয়াত বলেন, “বিমানবন্দর কাওলা থেকে মোট ১৫টি র্যাম্প নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১৩টি খুলে দেওয়া হবে। বনানী ও মহাখালী র্যাম্প এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। আপাতত র্যাম্প দুটি খুলছে না।”
তেজগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তেজগাঁও থেকে মহাখালী যেতে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের কাছেই নেমে এসেছে একটি মসৃণ সড়ক। কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন।
প্রথমে মনে হতে পারে সেটি কোনো ফ্লাইওভারের সংযোগ সড়ক। এক্সপ্রেসওয়ের এই র্যাম্প ধরে নামলে কাছেই মহাখালী, আমতলী, গুলশান-১ ও জাহাঙ্গীর গেইট।
কাওলা থেকে ফার্মগেইট অংশের ১৫টি র্যাম্পের মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরে দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয়সরণিতে দুটি ও ফার্মগেইটে একটি।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এ উড়ালসড়কের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখওয়াত আকতার জানান, এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। নামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র্যাম্প রয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তিন ধাপে
· প্রথম ধাপ: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত, যার দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিমি।
· দ্বিতীয় ধাপ: বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেল ক্রসিং পর্যন্ত, যার দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮৫ কিমি।
· তৃতীয় ধাপ: মগবাজার রেল ক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত, যার দৈর্ঘ্য অবশিষ্টাংশ।
প্রকল্পে ১ হাজার ৪৮২টি পাইল, ৩২৬টি পাইল ক্যাপ, ৩২৫টি কলাম, ৩২৫টি ক্রস-বিম, তিন হাজার ৪৮টি আই গার্ডার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ৪৮টি আই গার্ডার এবং ৩২৮টি ব্রিজ ডেক স্থাপন কাজ শেষ।
প্রকল্পটি ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল। মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রকল্পটির আকার ও ব্যয় বাড়ার কারণে প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
দ্বিতীয়বারের মত প্রকল্পে সংশোধনী এনে সময় ও ব্যয় আরও বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শতভাগ সম্পন্ন করার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত উড়াল সড়কে নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।
শনিবার উদ্বোধন হতে যাওয়া অংশটুকু শেষ মুহূর্তের কাজও শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক শাখওয়াত আরেফিন বলেন, “শনিবার উদ্বোধন হবে, তবে যানবাহন চলবে পরদিন সকাল ৬টা থেকে। আর এই অংশের ফিনিশিংয়ের কাজও শেষ, এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।”