আগামী ৪ অক্টোবর তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
Published : 27 Jan 2024, 05:43 PM
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তার প্রেস সেক্রেটারি ইমরুল কায়েসের বরাত দিয়ে বাসস জানিয়েছে, রোববার সকাল ১০টা ১২ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য, চিফ হুইপ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, আইজিপি এবং কূটনৈতিক কোরের প্রধান প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
লন্ডনে হিথ্রো বিমানবন্দরে চার ঘণ্টা যাত্রা বিরতির পর বিমানের ফ্লাইটি রাত ১০টা ৫০ মিনিটে নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে অবস্থান করবেন। ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রথম দিন উচ্চ-পর্যারের সাধারণ আলোচনায় যোগ দেবেন তিনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনের প্রতিপাদ্য - ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্ব সংহতির পুনরুদ্ধার: সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্ব ত্বরান্বিত করায় ২০৩০ এজেন্ডা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ।’
২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের পাশাপাশি বিশ্ব-শান্তি, নিরাপত্তা, নিরাপদ অভিবাসন, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ও ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এর আগে জানিয়েছিলেন।
১৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), সার্বজনীন স্বাস্থ্য ও অর্থসহ বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি।
১৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ইউএনআইডিও ও ডেলয়েট আয়োজিত ‘খাদ্য ভাবনা- খাদ্য সরবরাহ চেইন উদ্ভাবনে এসডিজিকে ত্বরান্বিত করায় সহযোগিতা’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
একই দিনে তিনি ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে ‘এসডিজি সামিট-লিডার্স’ ডায়ালগ ৪ (এসডিজি অর্জনের জন্য সমন্বিত নীতি ও পাবলিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা) শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনে ভাষণ দেবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্কের লেক্সিংটন ভেনুতে একটি উচ্চ-পর্যায়ের নৈশভোজে যোগ দেবেন।
১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ, অ্যান্টিগা এবং বারবুডা, ভুটান, চীন, মালয়েশিয়া, চ্যাথাম হাউস এবং সুচনা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে চিকিৎসা পরিষেবা ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টে যোগ দেবেন।
২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে ‘টেকসই উন্নয়নে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য আন্তর্জাতিক গণ অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং দক্ষতা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনায় ভাষণ দেবেন।
একই দিনে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যামবিশন সামিট, মহামারী প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, নারী নেতৃবৃন্দের জাতিসংঘ প্লাটফর্মের বার্ষিক সভা, ক্লাইমেট অ্যামবিশন সংক্রান্ত উচ্চ পর্য়ায়ের জলবায়ু বিষয় ভিত্তিক সম্মেলনের পাশাপাশি ন্যাশনাল জুরিসডিকশনের বাইরের এলাকার সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য আইনের ওপর জাতিসংঘের কনভেনশনে যোগ দেবেন।
২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টের পাশাপাশি ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলা’ শীর্ষক ব্রেকফাস্ট সামিট এবং ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার, জাতিসংঘ মহাসচিবের জেনোসাইড বিষয়ক উপদেষ্টা, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) নতুন মহাপরিচালক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করবেন। ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করবেন। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১১টায় লন্ডনের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় লন্ডনে পৌঁছাবেন।
হিথ্রো বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন বেলা সাড়ে ১২টায় তার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)