লটারি হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা এখন মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল পেতে থাকবেন।
Published : 28 Nov 2023, 12:04 PM
সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য ডিজিটাল লটারি শেষে ফল প্রকাশ হয়েছে।
ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ফেইসবুক পেইজে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। লটারি হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা এখন মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল পেতে থাকবেন।
এছাড়া টেলিটকের মোবাইল থেকে এসএমএস করেও ফল জানা যাবে। সেজন্য GSA<Space>Result>Space>User ID লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
লটারির ফলাফল দেওয়া হবে অনলাইনেও। শিক্ষার্থী, অভিভাবক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা http://gsa.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ফলাফল জানতে পারবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধীন ৬৫৮টি সরকারি এবং ৩ হাজার ১৮৮টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় গত ২৪ অক্টোবর।
১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদন নেওয়ার কথা থাকলেও পরে তা বাড়িয়ে ১৮ নভেম্বর করা হয়।
এসব বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ লাখ ৬০ হাজার ৯টি আসন শূন্য রয়েছে। আর ভর্তির জন্য আবেদন ছিল ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯২টি।
আগে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য পরীক্ষা না নিয়ে লটারি হত। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে সব শ্রেণিতেই শিক্ষার্থী ভর্তিতে লটারি শুরু হয়। এবারও সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অনুষ্ঠানে বলেন, “লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধার সমতা প্রতিষ্ঠা, ভর্তি কোচিং বাণিজ্য, অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি রোধ, শিশু মনে অতিরিক্ত পড়ালেখার চাপ কমানো, সময় ও অর্থ সাশ্রয়, পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তির অশুভ প্রতিযোগিতা বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের যে কোনো বিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়ায়ও শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
“তাই ধারাবাহিকভাবে এবারও জনকল্যাণে এবং মেধার সমবণ্টন নিশ্চিত করতে সরকারি, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দৈবচয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে ভর্তির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।”
শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সরকারি সহযোগিতা পাওয়ার পরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষার কোচিং ক্লাস করত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তিকে কেন্দ্র করে একটা ইকনোমি গড়ে উঠেছিল। শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের বৈষম্য করত। অনলাইন লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় ভর্তি, কোচিং বাণিজ্য এবং বৈষম্য কমে এসেছে।
তিনি বলেন, “আমি এই শিক্ষার্থীকে নেব, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়... নানা ধরনের বৈষম্য চলত। এভাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বৈষম্য লালন করা হয়েছে। তথাকথিত কিছু স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে, যারা রেডিমেইড শিক্ষার্থী চায়, বাসায় প্রস্তুত হয়ে আসবে। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজটা কী? তাহলে কেন তাদের আমরা এমপিও দেব? কেন তাদের অবকাঠামো করে দেব?”
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলায়মান খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।