জেল হত্যা: আপিল আবেদনে ১১ জানুয়ারি আদেশ

জেল হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল আবেদনে ওপর আগামী ১১ জানুয়ারি আদেশ দেবে উচ্চ আদালত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2011, 02:51 AM
Updated : 9 Jan 2011, 02:51 AM
ঢাকা, জানুয়ারি ০৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জেল হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল আবেদনে ওপর আগামী ১১ জানুয়ারি আদেশ দেবে উচ্চ আদালত।
রোববার প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ আদেশের এই তারিখ ধার্য করেন।
আবেদনের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক অংশ নেন।
শুনানি শেষে আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, "হাইকোর্ট ডিভিশনের রায়টি ছিল বিকৃত। আমরা কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে ধারাবাহিকভাবে তা দেখানোর চেষ্টা করেছি। আদালতে দুজন সাক্ষীর বক্তব্যের কিছু কিছু অংশ তুলে ধরে তাদের মূল বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। এই বক্তব্য বিকৃত করে দুজন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এটা যে অন্যায় হয়েছিলো তা দেশবাসী জানুক।"
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ৬ ডিসেম্বর এ মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল আবেদনের শুনানি রোববার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি শেষে বহু প্রতীক্ষিত জেল হত্যামামলারও চূড়ান্ত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হলে গত বছরের ৭ নভেম্বর আপিল আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়।
জাতীয় চার নেতা হত্যামামলার অধিকাংশ আসামি আদালতের রায়ে খালাস পাওয়ায় এর পুনর্বিচারের বিষয়টি উঠে এসেছে। চার নেতার সন্তান আওয়ামী লীগ নেতারা সে দাবি করে আসছেন। আপিল আবেদনের শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষ এ হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার দাবি করে।
জেল হত্যার মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় গেলে ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান রায় দেন।
রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (পলাতক), দফাদার মারফত আলী শাহ (পলাতক) ও এল.ডি. (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদাসহ ১৫ জনকে। খালাস পান বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুর।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে হাইকোর্ট ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মারফত আলী ও হাশেম মৃধাকে অব্যাহতি দেয়। রায়ে মোসলেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারুক, শাহরিয়ার রশিদ, বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকেও খালাস দেয় হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বহাল রাখে আট সেনা কমকর্তার সাজা। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এমএইচএম বি নূর চৌধুরী, এএম রাশেদ চৌধুরী, আহমদ শরিফুল হোসেন, আবদুল মাজেদ, মো. কিসমত হোসেন ও নাজমুল হোসেন আনসর।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করে সরকার।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এসএন/এমইউএস/আরএ/১৪৩৯ ঘ.