জেল হত্যা: আপিল আবেদনের শুনানি রোববার থেকে

জেল হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের শুনানি রোববার শুরু হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চে এ শুনানি হবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2010, 09:51 AM
Updated : 4 Nov 2010, 09:51 AM
ঢাকা, নভেম্বর ০৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জেল হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের শুনানি রোববার শুরু হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চে এ শুনানি হবে।
সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোস্তফা জামান ইসলামের আবেদনে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য আপিল আবেদনটি গ্রহণ করে। এটি আপিল বিভাগের রোববারের কার্যতালিকায় দুই নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "রোববার লিভ টু আপিলের শুনানি হবে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।"
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি শেষে বহু প্রতীক্ষিত জেল হত্যা মামলারও চূড়ান্ত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হলো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে কয়েকজনকে বঙ্গবন্ধু হত্যামামলায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। তবে তাতেও মামলার গুরুত্ব কমেনি বলে মনে করেন আনিসুল হক।
তিনি মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জেলহত্যা মামলার আদর্শ ও গুরুত্ব ভিন্ন। কারণ রাষ্ট্রের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এজন্য এ মামলার গুরুত্ব রয়েছে।"
জেল হত্যাকাণ্ডের পর মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় গেলে ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান রায় দেন।
রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (পলাতক), দফাদার মারফত আলী শাহ (পলাতক) ও এল.ডি. (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু হত্যামামলার ফাঁসির আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদাসহ ১৫ জনকে। খালাস পান বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুর।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে হাইকোর্ট ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মারফত আলী ও হাশেম মৃধাকে অব্যাহতি দেয়। রায়ে মোসলেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারুক, শাহরিয়ার রশিদ, বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকেও খালাস দেয় হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বহাল রাখে আট সেনা কমকর্তার সাজা। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এমএইচএম বি নূর চৌধুরী, এএম রাশেদ চৌধুরী, আহমদ শরিফুল হোসেন, আবদুল মাজেদ, মো. কিসমত হোসেন ও নাজমুল হোসেন আনসর।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করে সরকার।
জাতীয় চার নেতা হত্যামামলার অধিকাংশ আসামি আদালতের রায়ে খালাস পাওয়ায় এর পুনর্বিচারের বিষয়টি উঠে এসেছে। চার নেতার সন্তান আওয়ামী লীগ নেতারা সে দাবি করে আসছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলিও পুনর্বিচারের জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আবেদনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। "আপিল বিভাগ চাইলে পুনর্বিচারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে", এ কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এটি/এমআই/২১৪৫ ঘ.