রাষ্ট্র যদি এগিয়ে আসে সমাজও এগিয়ে আসবে, বলেন তিনি।
Published : 03 Jun 2023, 11:02 PM
ক্যান্সারে আক্রান্তদের পারিবারিক ও সামাজিক সমর্থনের পাশাপাশি তা প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
শনিবার বিকালে ‘ক্যান্সার সারভাইভারদের’ সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে পারিবারিক ও সামাজিক সমর্থন ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দরকার। রাষ্ট্র যদি এগিয়ে আসে সমাজও এগিয়ে আসবে।
“সামাজিক উদ্যোগ হিসেবে বিভিন্ন কমিউনিটি ও সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। এই সংগঠনের মধ্য দিয়ে সচেতনতা বাড়বে।”
বাংলা একাডেমিতে ক্যন্সার সারভাইভার্স দিবস- ২০২৩ উপলক্ষে ক্যান্সার কেয়ার কমিউনিটি, বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ক্যান্সার ব্যক্তির সমস্যা নয়, এটা সামাজিক সমস্যা। ক্যান্সার কেন হচ্ছে? আমাদের বায়ু দূষণ, জল দুষণসহ সামাজিক নানা কারণে। এগুলো পুঁজিবাদী ব্যবস্থারই একটা অংশ।
“এই ব্যবস্থাটা আমাদের বিচ্ছিন্ন করছে, স্বার্থপর করছে, মুনাফা লিপ্সায় বিকৃত করছে, ভোগবাদীতায় আচ্ছন্ন করছে, এই ব্যবস্থাটাকে বদল করতে হবে। গোটা বিশ্ব একটা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এই অবস্থার উত্তরণে প্রয়োজন ব্যক্তিমালিকানার পরিবর্তে সামাজিক মালিকানা।”
তিনি বলেন, “আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য করছি, যত উন্নয়ন হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা তত বাড়ছে। এটা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার কারণে হচ্ছে। উন্নয়ন, পুঁজিবাদী ভাবনা, মুনাফা লিপ্সা, ভোগবাদীতা এগুলোর বিরুদ্ধেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আজকে মানুষের সভ্যতা বিপন্ন দশা পড়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটা হয়েছে পুঁজিবাদী ধারাতে এবং ব্যবস্থাটা ব্যক্তি মালিকানা।
“আমাদের কারও রোগ হলে বলা হয় ব্যক্তিগত অসুখ, পারিবারিক সমস্যা। রাষ্ট্র এগিয়ে আসে না। এটা একটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। আমাদের লড়াইটা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।”
অনুষ্ঠানে ক্যান্সার প্রতিরোধে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন, এমন ১০ জন 'সারভাইভারদের' সম্মাননা দেওয়া হয়।
তারা হলেন- উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষক ড. রুবিনা হোসেন, আইনজীবী ও ক্যান্সার সংগঠক দেবাহুতি চক্রবর্তী, ক্যান্সার সংগঠক তাহমিনা গাফফার, চিকিৎসক সালেহ উদ্দিন মাহমুদ তুষার, ব্যবসায়ী খুজিস্তা নূর ই নাহারিন ( মুন্নি), লেখক অদিতি ফাল্গুনী, চলচ্চিত্র নির্মাতা রফিকুল আনোয়ার রাসেল, শিক্ষক জেসমিন পারভীন সীমা, ক্যান্সার সংগঠক নূর-এ শাফী আহনাফ ও ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অ্যান্ড নিউট্রিশনিস্ট আনিকা তাহসিন।
তাদের একজন খুজিস্তা নাহারিন বলেন, “আমরা মূল গোড়ার দিকে কেন লক্ষ্য করছি না যে, কেন আমাদের ক্যান্সার হচ্ছে। আমাদের খাদ্যে বিষ, বাতাসে শিশার পরিমাণ অনেক বেশি। ঢাকা শহর একটা দূষিত শহর। তাহলে আমরা বাঁচব কী করে?
“আজকে আমার ক্যান্সার হয়েছে, কালকে আপনারও হবে। খাবারে ফরমালিন, এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমরা আজকে যারা সারভাইভার তারা কেন, অনেক মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
ক্যান্সার কেয়ার কমিউনিটি, বাংলাদেশের আহ্বায়ক জাহান-ই-গুলশান শাপলার সঞ্চালনায় ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল ও শিল্পী সাহান বক্তব্য দেন।