যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকের দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ইসি নিয়োগের সর্বশেষ সার্চ কমিটির প্রধান ছিলেন।
Published : 14 Jan 2024, 10:05 AM
দেশের চতুর্বিংশতিতম প্রধান বিচারপতি হিসেবে সংবিধান ও আইনের ‘রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধানের’ শপথ নিলেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মঙ্গলবার সকালে বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে তিনি নতুন দায়িত্বের শপথ নেন।
সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এবং সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী বঙ্গভবনের দরবার হলে এই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে নতুন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেন। সেদিন প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকের দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ইসি নিয়োগের সর্বশেষ সার্চ কমিটির প্রধান ছিলেন। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, ৬৭ বছর বয়স, অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন পালন করবেন।
১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানার ছয়াশী (হাটনাইয়া) গ্রামে ওবায়দুল হাসানের জন্ম। তার বাবা আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। তার মায়ের নাম বেগম হোসনে আরা হোসাইন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং অর্থনীতিতে মাস্টার্স করার পর আইনে লেখপড়া করেন ওবায়দুল হাসান। এলএলবি শেষ করে ১৯৮৬ সালে তিনি আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের তালিকাভুক্ত হন।
পরে ১৯৮৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন ওবায়দুল হাসান।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০০৯ সালের ৩০ জুন অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে যোগ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। নিয়ম অনুযায়ী, দুই বছর পর তার নিয়োগ স্থায়ী হয়।
হাই কোর্টে দায়িত্ব পালন কালেই ২০১২ সালের ২৩ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারক হিসেবে যোগ দেন দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে ১১টি যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় আসে।
২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারক হিসেবে পান দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিন বছরের মাথায় তিনি বাংলাদেশের বিচারালয়ের সর্বোচ্চ পদে অসীন হচ্ছেন।
‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র: একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামে দুই বই লিখেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তার ভাই সাজ্জাদুল হাসান নেত্রকোণা-৪ আসনের সংসদ সদস্য। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব তিনি।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)