সড়কে শৃঙ্খলা আসছে না সচেতনতার অভাবে: কাদের

‘আমাদের সবক্ষেত্রে উন্নয়ন, এরপরও যখন রাস্তায় বের হই, সেখানে শৃঙ্খলার অভাব।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2023, 04:21 PM
Updated : 22 Jan 2023, 04:21 PM

বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়নের পরও সচেতনতার অভাবে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না বলে মনে করেন এক যুগ ধরে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ওবায়দুল কাদের।

রোববার ঢাকার তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে এক বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “আট লেইন করি, ছয় লেইন করি, যতই উড়াল সড়ক, যতই আমরা কাজ করি, শৃঙ্খলা না আসলে সব উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে।

“যে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে যে উন্নয়ন, যে অর্জন এটা বিশ্বে বিস্ময়কর। বাংলাদেশ শুধু সড়ক সেতুতে কী বিস্ময়কর উন্নয়ন করেছে। আমাদের শিক্ষা, আমাদের বিদ্যুৎ সবক্ষেত্রে উন্নয়ন। এরপরও আমরা যখন রাস্তায় বের হই, সেখানে শৃঙ্খলার অভাব।”

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সচেতনতা সৃষ্টির উপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এত উন্নত জাতি, যেটা সমৃদ্ধি দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তারপরও কেন সচেতন হব না। শৃঙ্খলার ব্যাপারে আমরা সজাগ হবো।”

সড়ক ভবনে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের নতুন কমিটি গঠন করেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীকে সভাপতি করে সড়ক পরিবহন, ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর সিটি করপোরেশন, রাজউক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, ডিএমপি কমিশনার ও ডিটিসিএ এর সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “ঢাকা শহরে সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের করণীয় বিষয়ে এটা (কমিটি) মূলত সমন্বয়ের জন্য। এখানে মূলত সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

“আমাকে প্রপোজাল দিয়েছেন, তার প্রেক্ষিতে আমরা এই কমিটি করেছি। কমিটিটা করেছি আরো ভালোভাবে সমন্বয় করার জন্য।”

বর্ষা মৌসুমে সড়কে খোঁড়াখুড়ির কথা তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, “বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বে নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। রাস্তা কাটছিড়া করতে হলে সিটি করপোরেশনকে অবহিত করতে হবে। যার যে প্রকল্প আছে, সেটাও সিটি করপোরেশনকে জানাতে হবে।”

ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহারে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ব্লক পরিবেশ বান্ধব, সে কারণে এই ব্যবস্থাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।

কাদের বলেন, “চারটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে। নিমতলী বস্তির জায়গা হস্তান্তরের বিষয়টি সাব কমিটির আলোচ্যসুচির মধ্যে থাকবে। ঢাকা সিটি করপোরেশন এবং তার আশেপাশের কয়েক জেলা প্রসারিত করার বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত আসে এখানে, সে কারণে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”

বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপির কবে সম্মেলন হয়েছে, ফখরুল সাহেবের কী মনে আছে? আন্দোলনেও ব্যথ, নির্বাচনেও ব্যর্থ। কাজেই বিএনপির নেতাদের ‘টপ টু বটম’ অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিৎ। সেটা সময়ের ব্যাপার কিনা আমরা দেখতে চাই।

“তারা নিজের ঘরে প্র্যাকটিস করে না। আওয়ামী লীগ প্রতি তিন বছর সম্মেলন হয়, প্রত্যক মাসে আমাদের সম্পাদকমণ্ডলীর মিটিং হয়। প্রত্যক ছয়মাসে আমাদের জেলাগুলোকে নিয়ে বর্ধিত সভা হয়। একবছরে আমাদের জাতীয় কমিটির সভা হয়। আমি পিটার হাসকে অনুরোধ করব, আপনারা ডেমোক্রেসির কথা বলতে আসলে যারা ডেমোক্রেসিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে বিএনপিকে জিজ্ঞেস করুন, তাদের ঘরে ডেমোক্রেসি নেই কেন? সেটা আগে জিজ্ঞেস করুন। কেন তারা সম্মেলন করেন না। কয় বছর আগে সম্মেলন করেছে।”

বৈঠকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শরিফ আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিনুল্লা নূরীসহ ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।