টিকেট কালোবাজারি: রেলের আরেক বুকিং সহকারী গ্রেপ্তার

এ নিয়ে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে গত ১০ দিনে রেলওয়ের তিনজন বুকিং সহকারী গ্রেপ্তার হলেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2024, 01:32 PM
Updated : 14 Feb 2024, 01:32 PM

নিজের বুকিং আইডি থেকে বিভিন্ন নামে টিকেট কেটে কালোবাজারিদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে রেলের এক বুকিং সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে রেল পুলিশ।

গ্রেপ্তার সাথী আক্তার (৩৩) বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী। বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে রেল পুলিশের ঢাকা জেলার সুপার আনোয়ার হোসেন জানান।

এ নিয়ে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে গত ১০ দিনে রেলওয়ের তিনজন বুকিং সহকারী গ্রেপ্তার হলেন।

রেলওয়ে স্টেশনগুলোর কাউন্টারে বসে যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করা বুকিং সহকারীদের কাজ। সেজন্য রেল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রত্যেককে একটি ‘বুকিং আইডি’ দেয়, যার মাধ্যমে তারা কাউন্টারে রক্ষিত কম্পিউটারে বসে রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে ঢুকতে পারেন।

পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “সাথী আক্তার প্রতিদিন ডিউটিতে আসা মাত্র নিজের বুকিং আইডি দিয়ে বিভিন্ন তারিখের, বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেনের টিকেট কেটে নিজের কাছে রেখে দিতেন। এরপর ডিউটি শেষে কেটে রাখা টিকেটগুলো নিয়েই স্টেশন ত্যাগ করতেন।

“পরবর্তীতে তিনি টিকেটগুলো তার চক্রের কালোবাজারিদের কাছে সুবিধাজনক স্থানে গিয়ে পৌঁছে দিতেন, বিনিময়ে লাভের টাকা বুঝে নিতেন। টিকিট কাটার জন্য তিনি কালোবাজারি ও দালালদের সরবরাহ করা অজ্ঞাত নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতেন।”

সাথী কালোবাজারি চক্রের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গভীর রাতে বিমানবন্দর এলাকায় টিকেট ও অর্থের লেনদেন হত বলে পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি টিকিট কালোবাজারিদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী রফিকুল ইসলাম (৩০) এবং ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের বুকিং সহকারী নূর আলম মিয়াকে (৩০) গ্রেপ্তার করে রেল পুলিশ।

এসপি আনোয়ার হোসেন বলেন, এই তিন বুকিং সহকারীর কাজের ধরন একই রকমের। ময়মনসিংহের বুকিং মাস্টার রফিকুল ইসলামের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তিনি স্টেশনের টিকিট কাটতে আসা যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর ডায়েরিতে টুকে রাখতেন। তারপরে সময় সুযোগ মত সেইসব পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকেট কেটে কালোবাজারিদের হাতে তুলে দিতেন।

সম্প্রতি ‘টিকেট যার, ভ্রমণ তার’ নীতি বাস্তবায়নে টিকেট কাটার সময় যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

এ প্রক্রিয়ায় কালোবাজারি কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন রেল কর্মকর্তারা। প্রথম কয়েকদিন রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেনে যাত্রীদের টিকেট যাচাইও করেছিল।

তবে এখন সবই আবার আগের মত। স্টেশনগুলোতে টিকেট চলে যাচ্ছে কালোবাজারিদের হাতে। আর যাত্রীরা অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকেট পাচ্ছেন না।