৯৪ বছর বয়সী এই জর্দা ব্যবসায়ী ১৫ বছর ধরে সেরা করাদাতা মনোনীত হয়েছেন।
Published : 20 Dec 2023, 06:39 PM
বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও শারীরিক কষ্টকে তুচ্ছ করে সেরা করদাতার গর্বের পুরস্কার নিতে হাসপাতাল থেকে হুইল চেয়ারে এসেছেন মো. কাউছ মিয়া।
গত দেড় দশক ধরে টানা সেরা করদাতার সম্মাননা পাচ্ছেন ৯৪ বছর বয়সী পুরান ঢাকার এ জর্দা ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তাকে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
বুধবার এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতাল থেকে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে হুইল চেয়ারে করে শেরে বাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আসেন কাউছ মিয়া।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিমের হাত থেকে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড ও সেরা করদাতার সম্মাননা গ্রহণ করেন তিনি।
এদিন কাউছ মিয়া ছাড়াও সেরা করদাতা হিসেবে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭৬ জন ব্যক্তি, ৫৪টি প্রতিষ্ঠান ও ১১টি অন্যান্য শ্রেণি।
গত ৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন ক্যাটাগরি বা শ্রেণিতে বছরের সেরা করদাতাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তার কাছ থেকে পুরস্কার নেওয়ার আশা ছিল কাউছ মিয়ার। অর্থমন্ত্রী অনুষ্ঠানে না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে এনবিআর চেয়ারম্যান ও অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার গত ২০২২-২৩ করবর্ষের সেরা কর দাতাদের মধ্যে ট্যাক্সকার্ড ও সম্মাননা প্রদান করেন।
এদিন বেলা ১১টার পর শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে শুরু থেকে উপস্থিত থাকতে পারেননি কাউছ মিয়া। তবে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে নাম ঘোষণার সময় জানান, কাউছ মিয়া পথে আছেন।
এর প্রায় ৩০ মিনিট পর হুইল চেয়ারে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন তিনি। এ সময় তার তিন ছেলে মো. জাহাঙ্গীর, মো. শাহজান ও মো. মানিক মিয়া পেছনে হেঁটে আসছিলেন।
পুরান ঢাকার হাকিমুপরী জর্দা ব্যবসায়ী উপস্থিত হওয়ার সময় অনুষ্ঠানে আলাদা এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়। অনেকে তালি দিয়ে টানা ১৫ বছরের দেশের সেরা এই করদাতাকে স্বাগত জানান।
এরপর এনবিআর চেয়ারম্যান মঞ্চের সামনে এসে আলাদা করে কাউছ মিয়ার হাতে ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা তুলে দেন।
সম্মাননা নেওয়ার পর মো. কাউছ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতিবছর সেরা করদাতা হওয়া আমার কাছে অনেক গর্বের একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আসলেন না কেন? তার হাত থেকে সম্মাননা নিতে পারলে আরও ভাল লাগত।”
এ সময় মো. কাউছ মিয়ার ছোট সন্তান মো. মানিক মিয়া বলেন, “আব্বার বয়স এখন ৯৪ বছর। বয়সের কারণে কিছুটা শারিরীক জটিলতা দেখা দেওয়ায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন আমরা সরাসরি স্কয়ার হাসপাতাল থেকেই আসলাম।
রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর রওয়ানা হবেন এবং সেদেশের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার বাবাকে চিকিৎসা জন্য ভর্তি করা হবে বলে জানান তিনি।