“যা কিছু আমাদের ওপর দিয়ে গেছে, সবকিছুর পর এই বিনীত উদযাপন হল একটি বার্তা– আগামীতে যা অপেক্ষা করছে, সেজন্যও আমরা প্রস্তুত। লড়াই চলবে!”
Published : 19 Nov 2024, 09:33 AM
পুরনো সংকটের অভিঘাত পেরিয়ে নতুন সম্ভাবনার আশা জাগানিয়া এই প্রহরে প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর উদযাপন করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
এ আনন্দানুষ্ঠানে সরকার ও রাজনৈতিক দলের নীতি-নির্ধারকরা যেমন থাকছেন; তেমনই থাকছেন বিচারপতি-আইনজীবী, ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তা, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী-সংগঠক, ক্রীড়া তারকা, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা আর নানা ক্ষেত্রে বাঁক বদলের সাক্ষীরা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন মুখপাত্র জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টায় রাজধানীর র্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের বলরুমে বসবে এই মিলনমেলা।
প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বক্তব্য শেষে নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে। অনুষ্ঠানটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
বাংলাদেশের সংবাদকে ডিজিটাল দুনিয়ায় নিয়ে যাওয়ার দিশারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “শেষ পাঁচ বছর ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। বার বার আদালতে যাওয়া; আইনজীবীদের সঙ্গে অসংখ্য বৈঠক, মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট, যার ফলে কয়েকশ কর্মীর বেতন হয়েছে বিলম্বিত, সামাজিক ভ্রুকুটি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ভগ্নদশা এবং দীর্ঘ এক অনিশ্চিত সময়– এই সব কিছুর মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছে আমাদের।
“এই সময়ে বন্ধুত্বের পরীক্ষা হয়ে গেছে, অনেকে বিশ্বাসঘাতকতাও করেছে; কিন্তু আমরা টিকে আছি। এখন সময় পুনর্গঠন, মেরামত আর নবায়নের।”
তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “যারা আমাদের পাশে ছিলেন, যারা ছিলেন না, সবাইকে ধন্যবাদ। আমাদের দুর্ভোগের নীল নকশা যারা করেছে, তাদের দেখে আমাদের অনুভবে এখন খেলে যাচ্ছে সেই জার্মান শব্দটি– Schadenfreude.
“যা কিছু আমাদের ওপর দিয়ে গেছে, সবকিছুর পর এই বিনীত উদযাপন একটি বার্তা দিচ্ছে– আগামীতে যা অপেক্ষা করছে, সেজন্যও আমরা প্রস্তুত। লড়াই চলবে!”
শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালের প্রথমার্ধে। অন্যান্য বার্তা সংস্থার মত ‘বিডিনিউজ’ তখন সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্য খবর সরবরাহ করত। দেশের অন্য সংবাদ সংস্থাগুলো টেলিপ্রিন্টারে খবর সরবরাহ করলেও বিডিনিউজ এ কাজটি শুরু করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
২০০৬ সালে বার্তা সংস্থাটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা বদলের পর এর খোল-নলচে বদলে যায়। সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর নেতৃত্বে নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ সংবাদমাধ্যমকে দেশের প্রথম ডটকম কোম্পানির রূপ দেয়।
২৩ অক্টোবর নতুন আঙ্গিকে শুরু হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ২৪ ঘণ্টার পথচলা। বাংলাদেশে ডিজিটাল সংবাদ যুগের সূচনা তখনই।
১৮ বছরের পথচলায় সংবাদের মোড়কে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যত ইতিহাস গ্রন্থনার কাজটিই করে গেছে। নিত্য নতুন উদ্ভাবনে উন্মোচন করে গেছে নতুন নতুন সংবাদ সেবা, যে পথ ধরে এগিয়ে এসেছে আরো অনেকে।
সময়ের উদ্ভাবনী মেজাজকে ধারণ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটে যুক্ত হয়েছে ‘মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট’। মোবাইল ফোনে সংবাদ সেবা, ইংরেজি ও বাংলায় ব্রেকিং নিউজ ও নিউজ অ্যালার্ট সেবায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমই বাংলাদেশে পথিকৃৎ। সব বয়সী, সব রুচির পাঠকের জন্যই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ডিজিটাল মাধ্যমে তৈরি করেছে আলাদা আলাদা ক্ষেত্র।
২০১৩ সালে দেশে নানা ঘটনায় মানুষের খবর জানার আগ্রহ যখন তুঙ্গে, গুগল অ্যানালিটিকসে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ইউনিক ভিজিটর পৌঁছে যায় ৪৩ লাখে; নিকটতম প্রতিযোগী তখনও ২১ লাখে। এরপর উত্থান পতনে এগিয়েছে পরিসংখ্যান, টেনে ধরার চেষ্টা হয়েছে নানাভাবে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও পাঠক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সঙ্গে পেয়েছে সর্বক্ষণ। ২০১১ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম যখন পঞ্চম বর্ষপূতি উদযাপন করে, ফেইসবুকে অনুসরণকারীর সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ২৫৭। পরের ১৩ বছরে তা কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
পাঠকের জন্য ২৪ ঘণ্টা দেশ-বিদেশের সর্বশেষ ঘটনার খবর বাংলা ও ইংরেজি- দুই ভাষায় বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ নিয়ে আসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এই পথচলা সবসময় মসৃণ ছিল না।
সংবাদমাধ্যমটির একজন মুখপাত্র বলেন, “দিনে দিনে যেমন কাজের ব্যাপ্তি বেড়েছে, তেমনই মিলেছে পাঠক, শুভানুধ্যায়ীদের সাড়া। সংকট এসেছে, কিন্তু সংগ্রাম অব্যাহত থেকেছে। অসময়ের চাপ আমাদের কোণঠাসা করতে চেয়েছে, বদলে যাওয়া সময়ের প্রত্যাশা আমাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে, কিন্তু সংবাদের সততায় আমরা আপস করিনি।
“তথাকথিত জনপ্রিয় ধারার বিপরীতে দায়িত্বশীল সম্পাদকীয় অবস্থান ধরে রাখতে পারা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। সেই অঙ্গীকার ধরে রেখেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পাঠকের আস্থা আর ভরসার সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠতে পেরেছে।”