“ভারতের বুক চিরে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ”, বলেন তিনি।
Published : 01 Jul 2024, 10:19 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে রেল কানেকটিভিটি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
সমঝোতা স্মারকের সব ধারা ‘না পড়ে’ এবং ‘না বুঝেই’ বিএনপি ‘অপপ্রচার ও মিথ্যাচার’ করছে এবং ধারাগুলো খণ্ডিতভাবে তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
কেবল বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের ট্রেন নয়, ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ট্রেন চলার বিষয়েও সমঝোতার কথা তুলে ধরেছেন প্রতিমন্ত্রী।
সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক নিয়ে খণ্ডিত বক্তব্য তুলে ধরার অভিযোগ এনে আরাফাত বলেন, “এসব সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ যেসব স্থানে লাভবান সে বিষয় নিয়ে সমালোচকরা কিছু বলছে না। ভারতের মধ্য দিয়েও বাংলাদেশের ট্রেন নেপাল ও ভুটান পর্যন্ত চলবে, নেপাল-ভুটান থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রেন বাংলাদেশে আসবে এবং কলকাতা বন্দর ব্যবহার না করে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে নেপাল, ভুটান।
“ভারতের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ গ্রিডের মাধ্যমে তাদের ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে ভারতের বুক চিড়ে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরে ১০টি বিষয়ে সমঝোতা স্মরণ সই হলেও সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে রেল কানেকটিভিটি নিয়ে।
ভারতীয় রেল বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতেরই আরেকটি অঞ্চলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করবে, এই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনামুখর হয়েছে বিএনপি। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে বলেও মনে করে দলটি।
এই সমঝোতা স্মারকের বিষয়টি পর্যালোচনা করে রোববার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার দলের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ““কানেকটিভিটি নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে যা করা হয়েছে তাতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
“গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যে সকল চুক্তি করা হল, তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে।”
ফখরুল একাধিক বক্তব্যে বলেছেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় ট্রেনে অস্ত্র ও সেনা পরিবহন হবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
তবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি অপপ্রচার করছে যে, বাংলার বুক চিরে ভারতের ট্রেন চললে বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে। এটি মোটেই সঠিক নয়।”
“সমঝোতা স্মারকের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘রেড ট্র্যাফিক’ তথা অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরকসহ বিপজ্জনক ও আপত্তিকর পণ্য পরিবহন করা যাবে না।
“সমঝোতা স্মারকের ৪ নম্বর ধারায় এটাও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য ও মানুষের চলাচল সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় আইন, প্রবিধান এবং প্রশাসনিক বিধানের অধীন হবে।”
মির্জা ফখরুলের সাম্প্রতিক আরেকটি বক্তব্যের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সমঝোতা স্মারক কোনোভাবেই সরকারের ‘নতজানু’ পররাষ্ট্রনীতি নয় বরং এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক।”
সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত কোনো চুক্তি নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।