“আপনাকে (সাংবাদিকদের) ডেকে ব্রিফ করল। করলেই কি আপনি ছবিসহ নাম প্রকাশ করে দেবেন?”, বলেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
Published : 26 Feb 2024, 08:50 PM
কিশোর অপরাধীদের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের তাগিদ দিয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। বলেছেন, এমনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে হবে, যেন কারো নাম বা ছবি না আসে।
এ বিষয়ে আইন এবং উচ্চ আদালতে আদেশ আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক সময় নাম বলে দেয়। কিন্তু তাদের নাম গণমাধ্যমে আসা চলবে না।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও আদালতে সাংবাদিকতা বিষয়ে এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আদালতে সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)।
ইনায়েতুর রহিম বলেন, “শিশু আইন ও হাই কোর্টের রায়ে বলা আছে, শিশুদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে পরিচয় যাতে প্রকাশ করা না হয়। কিন্তু আমি কয়েকদিন ধরে দেখছি আইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে প্রবণতা আছে তা তুলে ধরার।
“তারা হয়ত ডাকল, ডেকে মিডিয়ায় ব্রিফ করল। কিন্তু প্রাথমিকভাবে ধরে নিতে হবে এরা কিশোর। কারো যদি বয়স কম বেশি হয় সে বিষয়ে প্রশ্ন আসলে সেটা আদালত নির্ধারণ করবে।“
কিশোর অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তারে আইনগত বাধা জানিয়ে ইনায়েতুর বলেন, “কিন্তু মিডিয়ায় এদের ছবি দেওয়া, পত্রিকায় পরিচয় প্রকাশ করা, এটা কিন্তু আইন বিরত করছে।
“এখন আপনাকে (সাংবাদিকদের) ডেকে ব্রিফ করল। করলেই কি আপনি ছবিসহ নাম প্রকাশ করে দেবেন? আপনাকে সংযত হয়ে আইনটা মেনে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে যাতে ছবি প্রকাশিত না হয়।”
আদালত সাংবাদিকতার বিষয়ে বিচারপতি ইনায়েতুর বলেন, “যতটুকু সত্য ততটুকু আপনি (প্রকাশ) করবেন। ততটুকু দেবেন যতটুকু আপনি প্রমাণ করতে পারবেন।
“যদি আপনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়, অবশ্যই ডিফেন্ড করবেন। আমি মনে করি এ ধরনের সাহসী সাংবাদিকতা অবশ্যই থাকা দরকার। কারণ, আমরা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নেই, বিচারক হই, যেই হই।
“আমাদের জবাবদিহিতা আছে জনগণের কাছে, আইনের কাছে, সংবিধানের কাছে। তবে সাবধানতার সঙ্গে করতে হবে, যাতে বিচারকের মানহানি না হয়।”
কিশোরদের অপরাধ চক্রে জড়িয়ে যাওয়াকে একটি সামাজিক সমস্যা উল্লেখ করে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস’ এর সভাপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, “আমাদের সমাজে কিশোর গ্যাং আসলেই একটা সমস্যা। কিশোররা কেন কী কারণে এসবে জড়ায়, সে বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞানীরা আছেন, তারা ভালোভাবে দেখতে পারবেন কীভাবে তা প্রতিহত করা যায়।”