“আদিবাসী শব্দটি নিয়ে আপত্তি থাকলে আলোচনা করে সমাধান করতে পারত। কিন্তু কথা ছাড়াই হুট করে তা বাদ দিল এবং তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আদিবাসী ছাত্রজনতা সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হল,” বলেন তিনি।
Published : 17 Jan 2025, 11:58 PM
জুলাই-অগাস্টের গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে, তার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের ‘মিল পাচ্ছেন না’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময়কালীন ও তার পরে এই শহরের (ঢাকা) বহু তরুণ তাদের হাত দিয়ে বিভিন্ন রঙ-বেরঙের গ্রাফিতি তৈরি করেছে। সেখানে প্রকাশ পেয়েছে এক নতুন বাংলাদেশের কথা, যে বাংলাদেশে স্বৈরশাসন থাকবে না, কিংবা থাকবে না কোনো বৈষম্য। সে বাংলাদেশ হবে সব বৈচিত্র্যের, সব মানুষের।
“কিন্তু গ্রাফিতিতে যে আকাঙ্ক্ষাগুলো তারা প্রকাশ করেছিল সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আকাঙ্ক্ষার কোনো মিল দেখতে পাচ্ছি না। তারা বৈষম্যবাদী, বৈচিত্র্যের বিরুদ্ধে আচরণ করছে।”
আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকার শাহবাগে এক সমাবেশে কথা বলছিলেন আনু মুহাম্মদ। ‘গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি’ নামের একটি সংগঠন এ সমাবেশের আয়োজন করে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসউদ ইমরান মান্না, গবেষক মাহা মির্জাও সমাবেশে বক্তব্য দেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রমিক তার মাসের পর মাসের বকেয়া মজুরির দাবি জানাতে গিয়ে গুলি খেয়ে মারা গেছে এই সরকারের সময়ে। এখনও অনেক কারখানা বন্ধ, যেখানে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার রয়েছে। তা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথাই নেই।”
আন্দোলনে সবার অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে নারীবিদ্বেষ, বিভিন্ন জাতি ও ভাষার মানুষের বিরুদ্ধে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হল। এনসিটিবি শিক্ষার্থীদের দেয়ালে আঁকা যে গ্রাফিতি সংযুক্ত করেছিল, বইতে তা বাদ দিয়েছে ‘আদিবাসী’ শব্দটির জন্য। আদিবাসী নিয়ে দমন নিপীড়নের রাজনীতির জাল বিস্তৃত রয়েছে। আদিবাসী মানে তার নিজের সংস্কৃতি, আইন কাঠামো, জাতিগত বৈশিষ্ট্য আছে।
“এ সরকার যেহেতু গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কথা বলছে, আদিবাসী শব্দটি নিয়ে আপত্তি থাকলে আলোচনা করে সমাধান করতে পারত। কিন্তু কথা ছাড়াই হুট করে তা বাদ দিল এবং তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আদিবাসী ছাত্রজনতা সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হল। সেই গোষ্ঠীর ব্যাপারে আমরা সরকারকে আবার খুব নমনীয় হতে দেখছি।”
আনু মুহাম্মদ বলেন, “আমি এই সরকারকে বহুবার বলেছি, আপনারা যদি গণতন্ত্র সত্যিই প্রতিষ্ঠা করতে চান, তাহলে অবশ্যই সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যক্তিগতভাবে কারা ভুমি লিজ নিয়েছে সে তালিকা প্রকাশ করুন।”