“আমরা জামিনের মুচলেকা সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিয়েছি। তারা সেটি আদালতের হাজতখানায় জমা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মুক্ত হবেন,” বলেন আইনজীবী শাহীন।
Published : 08 Oct 2024, 06:13 PM
সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে হত্যা মামলায় রিমান্ডে পাঠানোর পরদিনই সেটিসহ ছয় মামলায় জামিন দিয়েছে আদালত।
তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
মঙ্গলবার শুনানি শেষে তাকে ছয় মামলায় জামিন দেন ঢাকা মহানগরের দুই হাকিম।
ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সাংসদকে বিএনপি কর্মী মকবুল হত্যা মামলায় আগের দিন ৫ দিনের রিমান্ডে পেয়েছিল পুলিশ। পাশাপাশি খিলগাঁও থানার দুই হত্যা মামলা এবং হত্যাচেষ্টার আরও দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সেদিন শুনানি শেষে আদালত কক্ষ থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশ বেষ্টনী ভেঙে সাবের হোসেনের ওপর হামলা চালিয়েছিল একদল ব্যক্তি।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই তাকে মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় খিলগাঁও থানার চার মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করেন সাবেরের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।
রাষ্ট্রপক্ষে সহায়তা করার জন্য ওই আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন বিএনপিপন্থি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী। শুনানি নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মেহেদী হাসান।
এদিকে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর বিএনপি কর্মী মকবুল হত্যা মামলায় সাবের হোসেনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদন জমা দিয়ে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন পল্টন মডেল থানার এসআই নাজমুল হাচান।
আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ বেষ্টনী ভেঙে সাবের হোসেনকে মারধর
রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামির রিমান্ড আদেশ মঞ্জুর হওয়ার পরে বিধি মোতাবেক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু তিনি কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারছেন না। কথোপকথনে জানা গেছে, তিনি আগে থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ, তার হার্টে তিনটি রিং পরানো হয়েছে।
“আসামির বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতিতে পুলিশ হেফাজতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আশানুরুপ তথ্য পাওয়া যাবে না। বিধায় বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ০৫ (পাঁচ) দিনের পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ না করে অদ্যই আপনার বরাবর প্রেরণ করা হল।”
পল্টন থানার আরেকটি হত্যা চেষ্টা মামলায় সাবেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ পারভেজ ভুঁইয়া। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর উভয় মামলায় তার জামিন আবেদন করে শুনানি করেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।
শুনানি শেষে নথি পর্যালোচনা করে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান।
সাবেরের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা জামিনের মুচলেকা সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিয়েছি। তারা সেটি আদালতের হাজতখানায় জমা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মুক্ত হবেন।”
গত রোববার রাজধানীর গুলশান থেকে সাবের হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সবশেষ মন্ত্রিসভায় তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।
এর আগে ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
সাবের হোসেন ২০২৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পান। একাদশ সংসদে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।