“আমরা বিক্ষোভকারী, সাধারণ মানুষ এবং সরকারকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি।”
Published : 25 Jul 2024, 09:24 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যে ‘জরুরি নয়’- এমন কর্মীদের বাংলাদেশ ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
বুধবার দৈনিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মীদের মধ্যে যাদের উপস্থিতি জরুরি নয়, তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা চাইলে দেশে ফিরতে পারেন, সে অনুমতি তাদের দেওয়া হয়েছে।
“বাংলাদেশে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কনস্যুলার ও অন্যান্য সেবা দেওয়ার জন্য দূতাবাস খোলা রয়েছে।”
ম্যাথু মিলারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভ্রমণের জন্য ‘চার মাত্রার বিপজ্জনক এলাকা’ ঘোষণা করেছে। সরকার দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে ‘গণহারে বলপ্রয়োগের ঘটনা’ ঘটছে। মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।
“শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। শাসকদের নৃশংসতা থেকে নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও জাতিকে রক্ষায় সুনির্দিষ্ট কী পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নিচ্ছে?“
উত্তরে মিলার বলেন, “প্রথমত, আমরা বাংলাদেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ স্পষ্ট করেছি। আমরা ঘোষণা করেছিলাম, আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের বিকল্প আমরা ভেবে দেখছি।”
এরপরই কর্মীদের বাংলাদেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টিকে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে যারা নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, যাদের উদ্বেগ আছে, তাদেরকে দূতাবাসে যোগাযোগ করতে উৎসাহ দিচ্ছি।”
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ‘পুরোপুরি কার্যকর’ কি-না, এমন প্রশ্নে বলেন, “দূতাবাস চালু আছে।”
বাংলাদেশকে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদসহ জঙ্গিগোষ্ঠীর ‘সেইফ হেভেন’ হিসাবে বর্ণনা করে জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগ এবং নয় জঙ্গির জেল পালানোর কথা তুলে ধরে আরেকটি প্রশ্ন করা হয় ম্যাথু মিলারকে।
প্রশ্নকারী বলেন, “সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ডে জঙ্গিবাদী শক্তি ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বড় রকমের ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তর কি মনে করে যে এ ধরনের কাজ বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ বাড়িয়ে তুলবে? স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং এসব সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করার পরিকল্পনার করছে?”
উত্তরে ম্যাথু মিলার বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে আমি যা বলে আসছি, আমরা বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সব ধরনের সহিংতা নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাকে আমরা সমর্থন করি।
“শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার চর্চার যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা আমরা করি। এবং আমরা সেসব বিক্ষোভকারীর সহিংসতারও নিন্দা করি, যারা শান্তিপূর্ণ চর্চাকে সহিংসতায় পরিণত করেছে।”
মিলার বলেন, “আমরা চাই, বাংলাদেশের জনগণ তাদের মৌলিক অধিকারের চর্চা করার সুযোগ পাক, যেরকম আমরা বিশ্বের সব দেশের জন্যই চাই। আমরা বিক্ষোভকারী, সাধারণ মানুষ এবং সরকারকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি।”
সাজাপ্রাপ্ত ৯ জঙ্গির জেল পালানোর ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য আছে কি-না, এমন প্রশ্নে মিলার বলেন, “এ বিষয়ে আমারা সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য নেই।”