ওই পরিস্থিতির মধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের যানবাহনকেই টার্মিনালে ঢোকার ক্ষেত্রে ‘বাধা দেয়নি’ বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
Published : 10 Sep 2024, 01:20 PM
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমন টার্মিনালে একটি রিকশা দাঁড়িয়ে আছে, আর ব্যাগ-স্যুটকেস নিয়ে দুপাশে আছেন দুই যাত্রী।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিমানবন্দরের টার্মিনালের এই ছবি নিয়ে চলমান আলোচনার জবাবে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত জুলাই ও অগাস্টে আন্দোলন ঘিরে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ঢাকায় যখন যানবাহনের সংকট চলছিল, তখন ফ্লাইট ধরতে অনেক যাত্রী রিকশার মত বাহন নিয়ে টার্মিনালে আসেন।
যাত্রীদের আসা যাওয়ার সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে ওই পরিস্থিতির মধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের যানবাহনকেই টার্মিনালে ঢুকতে ‘বাধা দেয়নি’ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা বলেন, “টার্মিনালে যে রিকশার ছবিটি ফেইসবুকে ছড়িয়েছে সেটি ভালো করে দেখুন। দেখবেন টার্মিনালে একটিও গাড়ি দেখা যাচ্ছে না। এর অর্থ তখন ঢাকা শহরে গাড়ি চলাচলে মত কোনো পরিস্থিতি ছিল না। এমনিতে কিন্তু এয়ারপোর্টের টার্মিনাল গাড়িতে ঠাসা থাকে।”
ওই কর্মকর্তার ভাষ্য, ছবিটি সম্ভবত জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে তোলা। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে যে সংঘাত শুরু হয়, তার মধ্যেও বিমানবন্দরের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু ছিল।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যখন ঢাকা অচল ছিল তখনও কিন্তু বিমানবন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু ছিল। রাস্তায় কোনো গণপরিবহন ছিল না। পুরো এয়ারপোর্ট সড়ক বন্ধ ছিল, কিন্তু যাত্রীরা নানাভাবে এসেছেন। বিমানবন্দরের কর্মীরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজে এসেছেন, ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছেন। তারা তখন কীভাবে এসেছেন সেটা একবার ভাবুন।”
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন কয়েক ঘণ্টা বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া পুরোটা সময় যাত্রীরা বিমানবন্দর হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে গেছেন এবং বিভিন্ন দেশ থেকে ঢাকায় এসেছেন। বিশেষ করে ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে পরিস্থিতি খুবই সংঘ্তপূর্ণ হয়ে উঠলে ঢাকায় যান চলাচল একেবারেই কমে যায়। তখন বিমানবন্দর সড়কের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ সময় অবরোধ ছিল, কোথাও হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়েছে।
“সে কারণে যাত্রীরা অনেকেই বিমানবন্দরে আসার গাড়ি পাননি। কাউকে কাউকে মাঝপথে গাড়ি ছেড়ে ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে হয়েছে অনেকটা পথ, তারপর হয়ত একটা রিকশা পেয়েছেন। এমনিতে এয়ারপোর্টের টার্মিনালে অটোরিকশা উঠতে দেওয়া হয়, কিন্তু সংঘাতপূর্ণ সময়ে অটোরিকশাও ঢাকা শহরে সেভাবে চলছিল না। কেউ কেউ দীর্ঘ পথ লাগেজ নিয়ে হেঁটেই বিমানবন্দরে এসেছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো যানবাহনকেই টার্মিনালে ঢোকার ক্ষেত্রে বাধা দেয়নি।”
যাত্রীরা কি ধরনের যানবাহন ব্যবহার করেছেন জানতে চাইলে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে রিকশা ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে যাত্রীরা এয়ারপোর্টে এসেছেন।
তাদের ভাষ্য, রিকশায় করে আসা একজন বিদেশি কিংবা একজন নারী যাত্রীকে রিকশা থেকে নামিয়ে হেঁটে যেতে বাধ্য করা ওই পরিস্থিতিতে মোটেও শোভনীয় ছিল না।
কর্মস্থলে আসতে গিয়ে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের কয়েকজন কর্মী ‘গুলিবিদ্ধ হয়েছেন’ বলেও বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।