“আমরা এজলাসে ঢুকে মামলার শুনানিতে অংশ না নিলেও নির্দলীয় আইনজীবদের দিয়ে, কনিষ্ঠ আইনজীবীদের দিয়ে শুনানি করাচ্ছি। তাহলে বিষয়টি কী দাঁড়াল?”
Published : 03 Jan 2024, 01:40 PM
বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বানে ‘আদালত বর্জন’ কর্মসূচিতে প্রভাব পড়েনি বিচারকাজে।
বুধবার এ কর্মসূচির তৃতীয় দিবসে ঢাকার উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতে প্রায় স্বাভাবিক কাজকর্ম চলে। যদিও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং শীতের কারণে এদিন আদালতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবদের উপস্থিতি ছিল অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা কম।
যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজদের অনেকে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাজে ব্যস্ত থাকায় আদালতে বসেননি।
‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিচারের নামে অবিচার বন্ধের দাবি’ নিয়ে ১ থেকে ৭ জানুয়ারি আদালত বর্জনের এই কর্মসূচি দিয়েছেন ভোট বর্জন করা দল বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
তবে এ কর্মসুচির ফল নিয়ে আশাবাদী নন খোদ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরাও। তাদের একজন নাম গোপন রাখার অনুরোধ জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, এভাবে আদালত বর্জনের কর্মসূচি দিয়ে ‘কোনো লাভ নেই’।
১৯৯০ এর দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আদালত বর্জন কর্মসূচির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “এভাবে আন্দোলন সর্বাত্মক হয় না। আমরা এজলাসে ঢুকে মামলার শুনানিতে অংশ না নিলেও নির্দলীয় আইনজীবদের দিয়ে, কনিষ্ঠ আইনজীবীদের দিয়ে শুনানি করাচ্ছি। তাহলে বিষয়টি কী দাঁড়াল? ছোট শুনানি তাদের দিয়ে করাচ্ছি আর বড় শুনানরি জন্য তাদের দিয়েই সময় চাইছি। কেমন করে তাহলে আদালত বর্জন হল?”
বুধবার সকাল সাড়ে ১০ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকার আদালতপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ, বিশেষ বিভাগীয় জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালসহ বিভিন্ন আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণসহ অন্যান্য শুনানি চলছে।
ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক মো. রফিকুল ইসলাম চারটি মামলায় সাক্ষ্য শুনেছেন। এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ
কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঞা বলেন, আদালত বর্জন ‘কেউ মানছেন না’।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি মিজানুর রহমান সজল অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, বর্জন কর্মসূচি সফল না হলেও বিএনপি সমর্থক কয়েকশ আইনজীবী এজলাসে প্রবেশ না করায় স্বাভাবিক দিনের তুলনায় ভিড় কম।
“এসব আইনজীবীর সঙ্গে মামলার আসামি দলীয় কর্মী ও নেতারাও নেই। তাদের নন পলিটিক্যাল মামলাতেও বিচারপ্রার্থীদের বলে দেওয়া হয়েছে, তারা নিজেরা এজলাসে গিয়ে মামলা পরিচালনা করবে না। সে কারণে বিচারপ্রার্থীরাও এজলাসের বারান্দায় ভিড় করেননি।”
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা বেলা ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা বারের আইনজীবী সমিতির মূল ভবনের সামনে সমাবেশ করেন। সেখানে তাদের কর্মসূচির পক্ষে ব্ক্তব্য দেওয়ার পর মিছিল করা হয়।
মিছিলটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে।
হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগেও এদিন স্বাভাবিক বিচার কাজ চলে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জানান।