বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
যদিও ভারতের আদালতে এ মামলায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপিলের সুযোগ আছে কি না- সে বিষয়ে নিশ্চিত নন আইনজীবীরা।
২০১১ সালে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে পঞ্চদশী ফেলানী খাতুনকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের এক জওয়ান।
ওই ঘটনায় বিএসএফের বিশেষ আদালতে হাবিলদার অমিয় ঘোষ গুলি করার কথা স্বীকার করলেও সে ‘নির্দোষ’ বলে রায় দেয় আদালত। ওই রায় বর্তমানে বিএসএফ মহাপরিচালকের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়।
ওই রায়ের পর বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহ্বান জানানো হয় ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশনের পক্ষ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “এটি একটি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। আমরা সব সময় এর ন্যায়বিচার চেয়ে আসছি।”
ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার পেতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, “রায়টি চূড়ান্ত হলে ন্যায়বিচার না পেলে আপিল করব।”
অবশ্য বিএসএফের আদালতে ফেলানীর পরিবারকে আইনি সহায়তা দেয়া কুড়িগ্রাম জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন বলছেন,
এটি ছিল এক বিএসএফ সদস্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের মামলা। বিএসএফ আইনে বিশেষ আদালতে এই বিচারকাজ চলে। কাজেই আপিল করতে হলে ভারতকেই করতে হবে। ফেলানীর বাবা অথবা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আপিল করার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ মামলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভারতের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে।
“ন্যায়বিচার না পেলে নিশ্চিই আপিল হবে”, বলেন তিনি।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামের কিশোরী ফেলানী ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বাবার সঙ্গে বাড়ি আসছিল ভারত থেকে। কিছুদিন পর তার বিয়ের কথা ছিল।
অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারের বেড়ায় ৫ ঘণ্টা তার লাশ ঝুলে থাকার ছবি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে গত ১৩ অগাস্ট ভারতের কুচবিহারের সোনারী এলাকায় বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়।
১৯ অগাস্ট আদালতে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ সাক্ষ্য দেন। এ বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন।