বড় মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পাওয়া গেলেই নড়েচেড়ে বসে প্রসাশন, হিসেব-নিকেশ শুরু হয় দুর্যোগ মোকাবেলার নানা প্রস্তুতি নিয়ে। তবে কয়েক যুগেও ঝড়-জলোচ্চ্বাসের মতো দুর্যোগে মানুষজনের আশ্রয়স্থল তৈরি হয়নি উপকূলে।
Published : 16 May 2013, 01:41 PM
সরকারও বলছে, পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র তারা তৈরি করতে পারেনি। তবে বিভিন্ন ভবন ব্যবহারের সুযোগ থাকায় আপাতত আশ্রয় দেয়া যাচ্ছে।
১৯৭০ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ে হতাহতের সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। এর মধ্যে শুধু ১৯৭০ সালের হ্যারিকেনে নিহত হন প্রায় ৫ লাখ মানুষ, যখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটির মতো।
দুর্যোগ ব্যবস্থানা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক আবদুল ওয়াজেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এপ্রিল মাসে দেশের সব আশ্রয় কেন্দ্রের হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে উপকূলীয় ১৩টি জেলায় ৩৭৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে, এরমধ্যে বর্তমান সরকারের মেয়াদে ৯৭০টি নতুন সাইক্লোন সেল্টার তৈরি করা হয়েছে।
চাহিদার তুলনায় এসব আশ্রয় কেন্দ্র পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করেন তিনি। ফলে দীর্ঘ উপকূলে ঝুঁকিতে রয়ে গেছেন অন্তত এক কোটি মানুষ।
সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় মহাসেনকে সামনে রেখে আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি সরকারি ভবন, ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ভবন, বাণিজ্যিক ভবন ও হোটেল-মোটেলেও আশ্রয় দেয়ার নির্দেশ দেয় সরকার।
১৯৯৩ সালে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে গঠিত পরিকল্পনা কমিশেনর মহাপরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরে আবদুল ওয়াজেদ জানান, ওই সময়ে ৫ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পর্যায়ক্রমে এ কাজ ধীর গতিতে এগিয়েছে।
“আর দেরি নয়। আপাতত আরো এক হাজার আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করতে হবে।”
১৯৯১ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের পর আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হয় সরকার।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা সংক্রান্ত মহাপরিকল্পনার প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঊপকূলের জনগোষ্ঠীর জন্যে চাহিদার মাত্র অর্ধেক আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে।
আবহাওয়ার সতর্ক বার্তা সংষ্কারে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।
জামিলুর রেজা বলেন, “বর্তমানে যে ১০টি সংকেত রয়েছে, তা বন্দর ও জাহাজের জন্য তৈরি করে ব্রিটিশরা। এখন জনগণের উপকারের জন্য জনমুখী সংকেত দরকার। সরকার ইতোমধ্যে নতুন সংকেতগুলো অনুমোদন করেছে। কিন্তু কোথায় যেনো আটকে আছে!”
গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নতুন সতর্কতা সংকেত প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বলে জানান সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রের (এসএমআরসি) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবদুল মান্নান।