প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি খুঁজে নিতে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে সার্চ কমিটি।
Published : 12 Feb 2022, 11:23 AM
শনিবার সকাল ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রথম বৈঠকে ২০ নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
সোয়া ১১টায় শুরু হওয়া এই বৈঠকে আমন্ত্রিত অধিকাংশ ব্যক্তি যোগ দিলেও কয়েকজনদে দেখা যায়নি।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে সভায় অংশ নেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রবীণ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান ও অধ্যাপক আসিফ নজরুল, এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুর্শিদ ও ফেয়ার ইলেকশন মনটরিং অ্যালায়েন্স (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিমউদ্দিন ও বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এই সভায় আমন্ত্রিত হলেও তাদের দেখা যায়নি।
সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ সদস্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক বৈঠকে অংশ নেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় আসেন সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তারপরই আসেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, যিনি এই কমিটির সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন।
শনিবার দুপুরে আরও ২০ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি।
দুপুর ১টায় শুরু হওয়া এই বৈঠকে ছিলেন দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, একাত্তর টেলিভিশনের মোজাম্মেল বাবু, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, এনটিভির বার্তা সম্পাদক জহিরুল আলম ও সাংবাদিক স্বদেশ রায়।
রোববার বিশিষ্ট আরও ২০ জনের সঙ্গে বৈঠক করবে সার্চ কমিটি।
আইনজীবী, শিক্ষক, আমলা, চিকিৎসক, গবেষক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সংস্থা, পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ীদের সংগঠনের ৬০ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা আগেই জানিয়েছিল সার্চ কমিটি।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’ গত ২৭ জানুয়ারি সংসদে পাস হওয়ার পর সে আইনের আলোকে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয় ৫ ফেব্রুয়ারি।
আইন অনুযায়ী, ইসি গঠনে নামের সুপারিশ চূড়ান্তের জন্য সার্চ কমিটির জন্য সময় ১৫ দিন। সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের খোঁজে আইন অনুযায়ী কাজ করছে।
সার্চ কমিটির কাজ
সার্চ কমিটির কাজ সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে।
আইনে বেধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।
এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুই জন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটির গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে হবে।
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি সভা করেছে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্ট জনের তালিকা চূড়ান্ত করে আমন্ত্রণ জানিয়েছে; নাম চেয়ে সময়সীমাও বেঁধে দেয়।
সার্চ কমিটির কাছে প্রস্তাবিতদের নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ইমেইলে ও সরাসরি গিয়ে জমার শেষ সময় ছিল শুক্রবার। ইতোমধ্যে নির্ধারিত সময়ে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে কয়েকশ’ নাম প্রস্তাব পেয়েছে।
সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইন অনুযায়ী যোগ্য বিবেচিতদের মধ্যে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করা হবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
তাদের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে বেছে নিয়ে রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন।
সেই ইসির ওপরই থাকবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার।
কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
সার্চ কমিটির হাতে ২৪ ফেব্রুয়ারি পযন্ত সময় থাকলেও নতুন ইসি কবে নাগাদ নিয়োগ হচ্ছে তা সার্চ কমিটির সুপারিশের উপর নির্ভর করছে।