খালেদার নাইকো দুর্নীতি: অভিযোগ গঠন ফের পেছাল

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আরও এক দফা পেছানো হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2021, 09:42 AM
Updated : 5 Oct 2021, 09:42 AM

কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার কার্যক্রম চলছে।

আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান ছুটিতে থাকায় মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত বিচারক নজরুল ইসলাম শুনানির জন্য আগামী ৪ নভেম্বর পরবর্তী তারিখ ঠিক করেন।

মঙ্গলবার এই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানির দিন ছিল বলে আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

গত ২ মার্চ খালেদা জিয়ার অব্যাহতির আবেদনের আংশিক শুনানি হয়। সেদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারায় আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দাখিলের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।

মহামারীর মধ্যে বাইরে বের হওয়া ‘নিরাপদ নয়’- এই যুক্তি দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দফায় দফায় সময়ের আবেদন করায় নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি কয়েক দফা পিছিয়ে যায়।

কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।

২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এছাড়া সাবেক আইন মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এই মামলায় আসমি থাকলেও তারা মারা যাওয়ায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

দুর্নীতির অপর দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ইতোমধ্যে ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে গত বছর ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার।

এরপর গতবছর সেপ্টেম্বরে এবং চলতি বছরের মার্চে আরও দুই দফায় ছয় মাস করে বাড়ানো হয় সাজা স্থগিতের মেয়াদ। এ নিয়ে মোট তিন দফায় ১৮ মাস সেই মেয়াদ বাড়ানো হয়।

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল পরিবারের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন