মুহিবুল্লাহ খুনের বিচার চাইলেন কূটনীতিকরা

রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনায় শোক জানিয়ে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2021, 06:52 PM
Updated : 30 Sept 2021, 06:52 PM

কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যানকে হত্যার পরদিন বৃহস্পতিবার তাদের এই প্রতিক্রিয়া আসে।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এক টুইটে বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকায় থাকা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে তিনি ‘দুঃখিত ও বেদনাহত’।

“আমি তার পরিবারের প্রতি শোক জানাচ্ছি এবং আশা করি, অপরাধীদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে।”

বুধবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪৮ বছর বয়সি মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী।

মুহিবুল্লাহকে রোহিঙ্গাদের আরেকটি সংগঠন আরসার সদস্যরা হত্যা করেছে বলে সন্দেহ করছে তার পরিবার।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে ২৪ ঘণ্টায়ও চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, খুনিরা রোহিঙ্গা বলেই তাদের ধারণা।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’  হিসেবে বিবেচিত ছিলেন।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন তিনি। জেনিভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি।

রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও ও বিদেশি সংস্থার সঙ্গে মুহিবুল্লাহর সম্পর্ক ছিল । ইংরেজি জানার সুবাদে তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনা চালাতেন।

এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকা কার্যালয় বলেছে, রোহিঙ্গা নেতা ও মানবাধিকার কর্মী মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ড মর্মান্তিক ঘটনা।

“আমরা তার পরিবারের প্রতি শোক জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, কর্তৃপক্ষ তার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে সফল হবে।”

ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার রবার্ট ডিকসন বলেন, “আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের নেতা মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডে মর্মাহত ও শোকাহত। তার পরিবার ও রোহিঙ্গাদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। আমার আন্তরিক শোক।”

ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো বলেন, “মুহিবুল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, যিনি ছিলেন রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর। মিয়ানমারে যেই রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল এবং তারা বসবাস করছে অনিশ্চয়তা ও অনিরাপত্তার মধ্যে।

“এই সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে থাকা অ্যাক্টিভিস্টরা কেমন ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তার এই হত্যাকাণ্ড তা মনে করিয়ে দিচ্ছে।”

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলি পাম্পালনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নেতা ও মানবাধিকারের পক্ষে থাকা কাজ করা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে তিনি মর্মাহত। অপরাধীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।