হাই কোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
নাশকতা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে ঢাকার কোতোয়ালি ও শাহবাগ থানার দুই মামলায় গত ৩০ মে হাই কোর্ট আসলাম চৌধুরীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিল।
সে আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু চেম্বার আদালত হাই কোর্টের জামিন আদেশে হস্তক্ষেপ না করে গত ২ জুন রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেয়।
গত ৬ জুন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০ জুন পর্যন্ত জামিন স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিলের আবেদন করতে বলে।
এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করলে বৃহস্পতিবার তা শুনানির জন্য ওঠে। রোববার তা নিষ্পত্তি করে আদেশ দিল আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।
স্থগিতাদেশ বহাল রাখলেও ২০১৩ সালের মামলায় এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা না পড়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন বেঞ্চের দুজন বিচারক।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, মামলার সর্বশেষ পুলিশ প্রতিবেদনে ঘটনার সাথে আসলাম চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতার কথা এসেছে।
আর আসাপক্ষের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল দাবি করেছেন, এ মামলা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। অন্য সব মামলায় আসলাম জামিন পেয়েছেন। এ মামলার এজাহারে নাম না থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক রাখা হয়েছে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামসহ সমমনা ১২ ইসলামী দল হরতাল ডাকে। এর সমর্থনে ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে কোতয়ালি থানাধীন বাবুবাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে মিছিল বের করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
বাবুবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পুলিশের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়ায়। সে সময় ‘দুর্বৃত্তরা’ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
কোতোয়ালি থানার এস আই এরশাদ হোসেনের দায়ের করা ওই মামলায় ১০১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকার খিলখেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীকে।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ‘এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
পরে রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলা এবং নাশকতা, চেক প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় আসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
দশম সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নাশকতার এক মামলায় ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।