ঢাকার কলাবাগানে নিজের ঘরে চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড ধরেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Published : 01 Jun 2021, 07:50 PM
সাবিরার ফ্ল্যাটে তার ভাড়াটিয়া নারীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তাতে মৃত্যু রহস্যের জট খোলার কোনো ইঙ্গিত মেলেনি।
সাবিরার পরিবার থানায় হত্যামামলা দায়ের করলেও তাতে আসামির তালিকায় কারও নাম দেওয়া হয়নি।
সোমবার দুপুরে কলাবাগান প্রথম লেইনের একটি বাড়ির চার তলার ফ্ল্যাট থেকে সাবিরার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ৪১ বছর বয়সী এই চিকিৎসক গ্রীন লাইফ হাসপাতালে কাজ করতেন।
সাবিরার শরীরে ধারাল জখম এবং পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন পাওয়ার কথা পুলিশ জানিয়েছিল।
সাবিরা ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দুজনকে ‘সাবলেট’ দিয়েছিলেন। তাদের একজন প্রথম সাবিরার লাশ দেখেন। অন্যজন বাসায় ছিলেন না।
লাশ উদ্ধারের একদিন বাদে মঙ্গলবার তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউ মার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহেন শাহ্ বিডিনউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যেভাবে এই চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে, ঘটনাটিকে তারা হত্যা হিসাবেই দেখছেন।
হত্যা সন্দেহের কোনো সূত্র পাওয়া গেছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তদন্ত কাজ চালাচ্ছি। তবে বলার মতো কিছু নেই।”
ডিএমপির কলাবাগান জোনের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান জানান, কয়েকজনকে হেফাজতে এনে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
“আমরা পরিবারের সদস্য, বন্ধু, আশেপাশের বাসার লোকজনসহ বেশ কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি-করছি।”
সাবিরার লাশ যে কক্ষে পাওয়া যায়, তার পাশের কক্ষের কানিজ সুবর্ণা, তার বন্ধু মাহতির মোহাম্মদ স্পন্দন, দারোয়ান রমজানসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছেন। যারা সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন, তাদের মোবাইল কললিস্টও জোগাড় করবেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাবিরার প্রথম স্বামী একজন চিকিৎসক ছিলেন। ২০০৩ সালে দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুর পর ২০০৫ সালে একজন ব্যাংকারকে বিয়ে করেন লিপি। তবে বর্তমান স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় সাবিরা আলাদা থাকতেন।
দুই সংসারে সাবিরার দুই সন্তান রয়েছে। তারা তাদের নানীর বাসায় থাকে। সেই বাসাটিও কলাবাগানে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে সাবিরার মামাত ভাই রেজাউল হাসান জুয়েল বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন।
সহকারী কমিশনার শরীফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি, অজ্ঞাত বলা হয়েছে।”
মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ এবং ৩৪ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাদের কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
সহকারী কমিশনার শরীফ বলেন, “যাদের পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাদের এই মামলায় গ্রেপ্তারে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
মামলার বাদী জুয়েল জানান, বিকালে আজিমপুর গোরস্থানে সাবিরাকে দাফন করা হয়। এরপর পরিবারের অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা থানায় গিয়ে মামলা করেন।
মামলা দায়েরে দেরির বিষয়ে সাবিরার পরিবার পুলিশকেও জানিয়েছিলেন।