ফুলেল শ্রদ্ধায় শওকত আলীকে শেষ বিদায়

জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শওকত আলীকে ফুলেল শ্রদ্ধায় বিদায় জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ, তার প্রতি জানানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্মান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2020, 03:09 PM
Updated : 16 Nov 2020, 03:09 PM

সোমবার বিকালে শওকত আলীর কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নেওয়া হলে সেখানে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সহকারী সামরিক সচিব কর্নেল রাজু আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সরকারী সামরিক সচিব লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাজিব আহমেদ ফুল দিয়ে শওকত আলীর কফিনে শ্রদ্ধা জানান। জাতীয় সংসদের স্পিকারের পক্ষে ফুল দেন উইং কমান্ডার সাঈদ মো. ওবায়দুল্লাহ।

এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শওকত আলীর পরিবার-পরিজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

এনামুল হক শামীম এখন যে আসনের এমপি, সেই শরীয়তপুর-২ আসন থেকে ছয়বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন শওকত আলী।

পূর্বসূরীর কথা স্মরণ করে শামীম বলেন, “তার প্রস্থানে দেশ একজন বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদকে হারাল। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহচর৷ তার মত বীর যারা আছেন, তারাই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছেন।… যে আদর্শে তিনি অবিচল ছিলেন, আমরা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাব।”

বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, “তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে তার ভূমিকা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। সে কারণেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর সাথে তাকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

“১৯৭৫ এর পরে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এভাবে তাকে পদচ্যুত করার পরও তিনি বঙ্গবন্ধুর যেই লক্ষ্য; বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি, তা বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি সংসদ সদস্য হয়েছেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হয়েছেন। মৃত্যু পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যাকে সহায়তা করেছেন।”

ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্ট থাকা অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় মৃত্যু হয় শওকত আলীর।

বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার কফিন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাগরিবের পর হয় জানাজা।

শওকত আলীর ছেলে খালেদ শওকত আলী জানান, সশস্ত্র বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তার বাবার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়ায় তাদের গ্রামের বাড়িতে।  

সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নড়িয়া শহীদ মিনারে রাখা হবে শওকত আলীর কফিন। জোহরের পর নড়িয়া বি এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে নিজের বাড়ি স্বাধীনতা ভবনের আঙিনায় চির নিদ্রায় শায়িত হবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী।