বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন তারুণ্যের প্রতীক। তিনি বরাবরই শিক্ষিত তরুণদের কেন্দ্রে রেখে রাজনীতিকে এগিয়ে নিতেন।
Published : 18 Aug 2020, 12:51 AM
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবনা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মূল বক্তা হিসেবে তিনি একথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক’ হিসেবে দায়িত্বে থাকা আতিউর বলেন, “রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন।
“প্রাক স্বাধীনতা পর্বে তিনি সব সময় শিক্ষার প্রশ্নে সোচ্চার ছিলেন। মুসলিম লীগের ম্যানিফেস্টোতে নারী-পুরুষের শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষা বৃত্তি চালু, মাতৃভায়ায় শিক্ষার কথা বলেছেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারে বঙ্গবন্ধুর ২১ দফার দুটিতে শিক্ষার কথা বলেছেন। গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বারবার শিক্ষা প্রশ্নকে সামনে এনেছেন। নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তর পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার দাবি তুলেছেন।”
স্বাধীন বাংলাদেশে শিক্ষা সংস্কারে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা তুলে ধরে আতিউর বলেন, “বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের মতোই ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে কর্তব্য হিসেবে মনে করতেন। স্বাধীনতার সংবিধানে শিক্ষাকে গুরুত্ব, নিজের শিক্ষা ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে প্রণয়ন করেছেন নিজস্ব শিক্ষা কমিশন এবং প্রণয়ন করেছেন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা।
“উচ্চশিক্ষার প্রসারে তিনি সূদরপ্রসারী চিন্তা করেছিলেন। তাই উচ্চশিক্ষা বিস্তারে বঙ্গবন্ধু সবসময়ই প্রাসঙ্গিক।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বিস্তারে কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখেছিলেন। এক, জাতীয়করণ। আমরা দেখি, দেশ স্বাধীনের পরই তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ করেছিলেন। দুই, গণতন্ত্রায়ন এবং ধর্মনিরপেক্ষকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য হয়ে পড়ে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, “বঙ্গবন্ধু শিক্ষাভাবনার প্রতিফলনের স্বরূপ আমরা দেখতে পাই সত্তরের নির্বাচনে ইশতেহারে। এতে বলা হয়, ‘শিক্ষায় বিনিয়োগ সবচেয়ে ভালো বিনিময়’। জ্ঞান আর আনুগত্য একসঙ্গে চলে না। বঙ্গবন্ধু দল-মত না দেখে জ্ঞানী মানুষদের ডেকে নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।”
সভায় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসাইন, শাইখ সিরাজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিনের সঞ্চালনায় এই আলোচনায় যুক্ত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের জায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাবিবুল হক খন্দকার, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিসিটি অব সিডনির অধ্যাপক সৈয়দা জাকিয়া হোসেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক।