১ অক্টোবরের মধ্যে সমন্বয়, পরে তদবির চলবে না: তাপস

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সব সেবা সংস্থাকে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয়ে আসতে ১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। ওই সময়ের পর কোনো ধরনের তদবির চলবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2020, 02:17 PM
Updated : 13 August 2020, 02:17 PM

রাজধানীর একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় আয়োজিত আধুনিক ও জনকল্যাণমূলক মহানগরী বিনির্মাণে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন সংক্রান্ত সভায় মেয়র এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় মেয়র তাপস বলেন, “ডিএসসিসির উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে অন্যান্য সংস্থার কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি এড়াতে ১ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকাকেন্দ্রিক সকল উন্নয়ন প্রকল্প সিটি করপোরেশনের সাথে সমন্বয় করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কোনো সংস্থা সমন্বয়ে না এলে সেই সংস্থাকে তাদের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য পরবর্তী অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”

সমন্বয়ের পর সেবা সংস্থাগুলো নিজেদের প্রকল্প বাস্তবায়ন  করতে পারবে জানিয়ে মেয়র বলেন, “অবশ্যই আপনারা আপনাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবেন কিন্তু এক জায়গায় তিনবার রাস্তা কাটতে পারবেন না। সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে এক জায়গা একবারই কাটতে পারবেন।

“কিন্তু পয়লা অক্টোবরের মধ্যে সমন্বয়ে না এসে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য পরবর্তীতে আপনারা কোনো তদবির করবেন না। আমি আপনাদের আপনাদের কোনো তদবির শুনব না। আপনাদের প্রকল্পের ফান্ডিং বিশ্ব ব্যাংকের হোক, এডিবির হোক, জিওবির হোক বা অন্য কোনো সংস্থার হোক, সমন্বয় ছাড়া সে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।”

এ সময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “ড্রেনেজ ওয়াটার মাস্টারপ্ল্যান তো হয়েছে, ২০১৬ সালে সেই প্ল্যান করার পর তা বাস্তবায়নের কী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে? ট্রান্সপোর্ট স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তো হয়েছে, কিন্তু সেটা বাস্তবায়নে বিআরটিএ কী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে অথবা যে কোঅর্ডিনেশন অথরিটি করা হয়েছে তারা কী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর প্রতি পপুলেশন প্ল্যানিং করার আহ্বান জানিয়ে তাপস বলেন, “শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ শহরেও পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা সম্বলিত নগরায়ন সৃষ্টি করা গেলে ঢাকার উপর চাপ কমবে।

“ঢাকা হল রাজধানী। ঢাকাকে আপনারা বস্তি বানাবেন না, ঢাকাকে রাজধানী বানান। আমরা রাজধানীর সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করব কিন্তু থাকার জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক চিন্তা পরিহার করতে হবে। লো-কস্ট আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলে তাদেরকে নদীর ওপারে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তারা ঢাকায় আসবে, কাজকর্ম করে আবার ঢাকা থেকে চলে যাবে।”

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “দেশটা একটা ছাতার মতো। এখানে সিটি করপোরেশন আছে, পৌরসভা আছে, রাজউক আছে, পূর্ত মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় আছে। করপোরেশন বলছে খাল এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা তাদের কাছে হস্তান্তর করতে।

“আমাকে এমনভাবে দিতে হবে যাতে সিটি করপোরেশন কাজ করতে পারে। সিটি করপোরেশনের কোথায় কোথায় সাপোর্ট প্রয়োজন, সক্ষমতা কোথায় বাড়াতে হবে তা দেখতে হবে। সারা পৃথিবীতে করপোরেশন অবশ্য এই কাজ করছে।”

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।