মৌলভীবাজারে তার খোঁজ পাওয়ার একটি গুঞ্জন সোমবার ছড়ালেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তার সত্যতাও পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া সনদ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ৬ জুলাই সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব।
সেদিন থেকেই সাহেদ লাপাত্তা। তার বিরুদ্ধে র্যাবের মামলার পাশাপাশি প্রতারণার অভিযোগে আরও মামলা হয়েছে। এক ব্যবসায়ীর করা প্রতারণার দুটি মামলায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
সাহেদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুদকও তার সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে। তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মৌলভীবাজারে সীমান্ত দিয়ে সাহেদ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল সোমবার।
বিষয়টি নিয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের যেসব অভিযান চলছে তা নিয়মিত অভিযানের মধ্যে পড়ে। সাহেদকে নিয়ে বিশেষ কোনো খবর তার কাছে নেই।
মৌলভীবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের ওসি বিনয় ভূষন রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “সাহেদ সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছে, এমন খবর ছড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত বিষয়টি ঠিক নয়।”
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস ছালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মৌলভীবাজার প্রতিনিধিকে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ওই এলাকার সবগুলো রির্সোট ও হোটেল এখন বন্ধ রয়েছে। এরপরও তিনি খবর নিয়েছেন, কিছু রিসোর্টে তিনি নিজেও গিয়েছেন। কিন্তু সাহেদের কোনো হদিস পাননি।
র্যাব-৯ এর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর নোমান আহমেদ জাকি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মৌলভীবাজার প্রতিনিধিকে বলেন, সাহেদের জন্য তারা বিশেষ কোনো অভিযান চালাননি। তবে তাদের নিয়মিত টহল ও অনান্য অভিযান অব্যাহত আছে।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান সারওয়ার বিন কাশেমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিলেট বা মৌলভীবাজারের সীমান্তে অভিযান চলছে বলে অনেকেই তার কাছে জানতে চেয়েছেন। তবে এমন কোনো অভিযানে র্যাব নেই।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে একাধিক দল কাজ করছে সাহেদকে গ্রেপ্তারের জন্য।
“আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি তাকে গ্রেপ্তারে।”
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও সাহেদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে এর আগে অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, “সাহেদকে গ্রেপ্তার এখন প্রেস্টিজ ইস্যু হযে গেছে। যে কোনো বাহিনীই তাকে গ্রেপ্তারের সাফল্য নিতে পারে। তবে যত দ্রুত হয়, ততই ভালো।”
তাকে এখনও আটক করতে না পারার প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববারই বলেন, আত্মসমর্পণ না করলে সাহেদকে ‘ধরে ফেলবে’ পুলিশ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আসা সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্য হওয়ার পর এখন তার নানা অপকর্মের খবর বেরিয়ে আসছে।