সাহেদ আত্মসমর্পণ না করলে ‘পুলিশ ধরে ফেলবে’, বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় ছয় দিন ধরে লাপাত্ত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ আত্মসমর্পণ না করলে পুলিশ তাকে ‘ধরে ফেলবে’।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2020, 03:35 PM
Updated : 12 July 2020, 03:35 PM

রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রীর এমন উত্তর আসে।

সাহেদ এখন কোথায় আছেন জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সাহেদ কোথায় সেটা সাহেদ জানে। সে কী ধরনের অন্যায় করেছে, আমাদের পুলিশ এবং র‌্যাব সেগুলো তদন্ত করছে। তদন্ত রিপোর্ট এলে আমি আপনাদের জানাতে পারব তার অন্যায়ের গভীরতাটা কতটুকু।”

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “সে যে অন্যায় করেছে, তার জন্য ইতোমধ্যে র‌্যাব ব্যবস্থা নিয়েছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে যেখানেই থাকুক, তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় পুলিশ তাকে ধরে ফেলবে।”

ইতোমধ্যে সাহেদের পাসপোর্ট জব্দ করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “দেশের বাইরে যাওয়ার তো কোনো উপায় নাই। বর্ডার যাতে ক্রস করতে না পারে, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে প্রথম বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে এই রোগের চিকিৎসা দিতে এগিয়ে আসে রিজেন্ট হাসপাতাল।

তবে পরীক্ষা না করেই তাদের করোনাভাইরাসের ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার ‘প্রমাণ পেয়ে’ গত সপ্তাহে ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখানে বেশ কিছু জাল প্রতিবেদন এবং অননুমোদিত পরীক্ষা কিট পাওয়া যায়।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে প্রায় ছয় হাজার লোকের কাছ থেকে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে রিজেন্ট, যদিও এক্ষেত্রে রোগীর কাছ থেকে কোনো টাকা তাদের নেওয়ার কথা নয়, কারণ সেসব পরীক্ষা সরকারি পরীক্ষাগারে হওয়ার কথা।

এছাড়া সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি ভেঙে তারা করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য রোগীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে, আবার সরকারের কাছেও বিল করেছে। 

অনিয়ম-জালিয়াতির প্রমাণ পেয়ে উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্টের দুটি হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে র‌্যাব। এ ঘটনায় র‌্যাবের করা মামলায় হাসপাতালের নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার হলেও মালিক মোহাম্মদ সাহেদসহ এখনও পলাতক বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য।

রোববার সচিবালয়ে সভার পর পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, “সমস্ত ইউনিট কাজ করেছে, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যত চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে।

ঈদুল আযহা সামনে রেখে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা ও চামড়া পাচার রোধ এবং শিল্পাঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা হয় সচিবালয়ের রোববারের সভায়।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ যে গাইড লাইন দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে সভায় জানানো হয়।

এ বছর অনলাইনে কোরবানির পশু কেনার বিষয়টিকে উৎসাহিত করতে সভায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এছাড়া কোরবানির হাটে প্রবেশের পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে বলা হয়।

সভায় বলা হয়, হাটে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। রাস্তায় কোনো পশুর হাট থাকবে না। পশু কোন হাটে যাবে তা ট্রাকের সামনে ব্যানারে লিখে দিতে হবে। প্রতিবারের মতই জাল নোট, ‘অজ্ঞানপার্টি’, ‘মলম পার্টির’ উৎপাত রোধে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে।