মা-দাদাকে ‘শিক্ষা দিতে’ চার মাসের শিশুকে ‘খুন করলেন’ আরেক মা

রাজধানীর আদাবরের একটি বস্তিতে চার মাসের একটি শিশুকে গলাকেটে হত্যায় প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2020, 11:45 AM
Updated : 8 July 2020, 11:45 AM

গ্রেপ্তার পারভীন আকতারেরও (২৪) দুই শিশু সন্তান রয়েছে।এরইমধ্যে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তিনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৩ জুলাই আদাবরের পানির পাম্প এলাকার একটি বস্তিতে সাদিয়া নামের চার মাস বয়সের শিশুটিকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় প্রথম দিকে কোনো ‘ক্লু’ পাওয়া যাচ্ছিল না।

পরে জানা যায়, শিশুটির দাদা সাজু মিয়া ওই বস্তির ‘কেয়ারটেকার’। সাজু ছাড়াও সাদিয়ার মা মোরশেদা বস্তিতে তাদের পাশের ঘরের বাসিন্দা পারভীনের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে খুব রূঢ় আচরণ করতেন। বস্তির সামনে ফুটপাতে পারভীনের স্বামী নজরুল ইসলাম একটি দোকান দিতে চাইলে সাজু বাধা দেন এবং এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ মনোমালিন্য হয়।

পারভীনের দুই শিশু সন্তান রয়েছে। তারা মোরশেদার ঘরে গেলে বা আশপাশে খেলাধুলা করলে সাজু ও মোরশেদা বকাঝকা করতেন বলে অভিযোগ পারভীনের।

চার মাসের শিশু হত্যায় গ্রেপ্তার পারভীন আক্তার

“দীর্ঘদিন ধরে মনের ভেতর জমে থাকা এ ক্ষোভ থেকেই মূলত সাজু ও মোরশেদাকে উচিৎ শিক্ষা দিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পারভীন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে,” বলেন উপকমিশনার হারুন।

বিরোধের ঘটনা জানার পর সন্দেহবশত ৫ জুলাই পারভীনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ৭ জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন জানান।

তিনি বলেন, “ঘটনার দিন সাদিয়াকে শুয়ে রেখে যখন তার মা রান্নাঘরে গেছে, এই সুযোগে পারভীন ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত শিশুর গলায় ব্লেড চালিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে সাদিয়ার মা ঘরে এসে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত বলে জানান।”

হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহ এড়াতে পারভীন খুবই স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেন জানিয়ে উপকমিশনার হারুন বলেন, “হত্যার ঘটনা ঘটিয়ে খুবই স্বাভাবিক ছিল এবং কাউকে কিছুই বুঝতে দেয়নি। এমনকি স্বামীকেও কিছু বলেনি পারভীন।”