পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে এক মামলায় অভিযোগপত্র

যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনের এক মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে র‌্যাব।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 02:49 PM
Updated : 29 June 2020, 02:55 PM

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের উপ-পরিদর্শক আরিফুজ্জামান সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।

মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার জাফর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আলোচিত এই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে ১২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, “আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করা হোক।”

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীকে ১৫ দিনের রিমান্ডে পেয়েছিল পুলিশ।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ ডলার, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কিছু মুদ্রা এবং দুটি ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়।

পরে পাপিয়ার ফার্মগেটের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০টি গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।  নরসিংদীতে পাপিয়ার বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়।

সে সময় র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটির টাকার উপরে।

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব। বিমানবন্দর থানায়ও তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আর মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে সিআইডি আরেকটি মামলা করে। এরপর দুদকও পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামে।

শেরে বাংলা নগর থানার অস্ত্র ও মাদক আইনের এক মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হল।

আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযোগপত্রটি মহানগর হাকিম শাহীনুর রহমানের আমলি আদালতে যাবে। তিনি অভিযোগপত্রে ‘দেখিলাম’ বলে স্বাক্ষর করবেন। পরে যাচাই-বাছাই শেষে বিচারের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে ঢাকার ১ নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। তবে এখন করোনাভাইরাসের কারণে আমলি আদালত বন্ধ রয়েছে।

“পরবর্তী পদক্ষেপ কবে কখন নেওয়া হবে এ মূহূর্তে বলা যাচ্ছে না।”

গ্রেপ্তারের পর ন২৪ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামীকে ঢাকার পৃথক দুটি আদালতে হাজির করার পর তিন মামলায় প্রত্যেককে ১৫ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।

এছাড়া বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের সহযোগী ২৯ বছর বয়সী সাব্বির খন্দকার এবং ২২ বছর বয়সী শেখ তৈয়বাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

রিমান্ড শেষে তারা সবাই কারাগারে আছেন।