ঘূর্ণিঝড় আম্পান: আশ্রয়কেন্দ্রে ২৪ লাখ মানুষ

কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৩০৭ জন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2020, 06:24 AM
Updated : 20 May 2020, 09:30 AM

এছাড়া ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২টি গবাদিপশুকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে বলে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় সরকারের সবশেষে প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “একটি লোককেও যেন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ছেড়ে না আসা হয়- আমরা সেই নির্দেশ দিয়েছি।”

লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৮টি থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার ৩৩৬টি করা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৩০৭ জনকে নেওয়া হয়েছে, এটাই এ যাবৎকালের ‘সর্বোচ্চ সংখ্যা’।

এর আগে ঘূর্ণিঝড় ফণির সময় ১৮ লাখ এবং বুলবুলের সময় ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল।

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের পাশাপাশি ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২টি গবাদিপশুকেও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

জরুরি ওষুধসহ মেডিকেল টিম প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন তাদের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে।

“আশা করছি, আমরা আম্পান থেকে রক্ষায় সর্বোচ্চ সফলতা পাব।”

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করে ১৪ হাজার ৩৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৭ লাখ ১৩ হাজার ৬০৭ জন মানুষকে রাখা সম্ভব। তা না করে দূরত্ব নিশ্চিত করতে অর্ধেক লোক রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ভাষাণচরের ১২০টি শেল্টারের মধ্যে একটিতে কিছু মানুষকে রাখা হয়েছে জানিয়ে এনামুর বলেন, “তাদের তদারকিতে নৌবাহিনী রয়েছে, তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

এর আগে বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভা হয়। সেখানে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সম্পর্কে সরকারপ্রধানকে অবহিত করা হয় বলে জানান এনামুর।

তিনি বলেন, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, কৃষি, স্থানীয় সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নৌ প্রতিমন্ত্রীও ওই সভায় যোগ দেন। এছাড়া ত্রাণ সচিব, পানিসম্পদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান এবং আইজিপি সভায় যুক্ত ছিলেন।

আবহাওয়া অফিস বলছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তখন এর বাতাসের শক্তি থাকতে পারে ঘণ্টায় প্রায় দেড়শ কিলোমিটার বা তার বেশি।

ঝড়ের সময় উপকূলীয় জেলার দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০-১৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরেও ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।