মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে লতিফ সিদ্দিকীর করা আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের সাবেক সাংসদ লতিফ সিদ্দিকী ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।
ওই সময় তিনি দুর্নীতি করেছেন অভিযোগ করে ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর বগুড়ার আদমদীঘি থানায় এই মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম।
সেখানে বলা হয়, মন্ত্রী থাকাকালে লতিফ ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের অধীনে থাকা বগুড়ার আদমদীঘির রানীনগর ক্রয় কেন্দ্রের ২ দশমিক ৩৮ একর জমি দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই বেগম জাহানারা রশিদ নামে এক নারীর কছে বিক্রির নির্দেশ দেন, তাতে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
মামলায় বেগম জাহানারা রশিদকেও আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। পরে আদালত অভিযোগ গঠন করে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করে।
জেয়াদ আল মালুম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রী থাকার সময় লতিফ সিদ্দিকী জমি বরাদ্দ দিতে যে ইচ্ছাপত্র জারি করেছিলেন সে ইচ্ছাপত্রের বৈধতা নিয়ে হাই কোর্টে একটি রিট মামলা বিচারাধীন। দুদক মামলা করার আগে থেকে এ মামলা বিচারাধীন।
“ইচ্ছাপত্রটা বৈধ না অবৈধ সে সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালত এখন পর্যন্ত দেয়নি। ফলে এর উপর ভিত্তি করে মামলা চলতে পারে না।”
আইনজীবী মালুম বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীকে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ সরকার নির্ধারিত মূল্যের ৫ শতাংশ বেশি দামে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ইচ্ছাপত্র জারি করেছিলেন লতিফ সিদ্দিকী।
“সে মূল্য অনুযায়ী জমির দলিল হয়েছে এবং জমির টাকা সরকারি কোষাগারে চলেও গেছে। এখানে লতিফ সিদ্দিকী কীভাবে লাববান হলেন? ফৌজদারী কোন অপরাধটা তিনি করলেন? এখানে তো তিনি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে চাননি।”
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় তারা অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করে। আদালত ছয় মাসের জন্য মামলাটি স্থগিত করেছে।”
গত ২০ জুন লতিফ সিদ্দিকী এ মামলায় বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তার আইনজীবীরা জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আসেন।
এরপর গত ৪ নভেম্বর হাই কোর্ট জামিন প্রশ্নে রুল জারির পাশাপাশি লতিফ সিদ্দিকীকে ছয় মাসের জামিন দেয়। পরে ১৭ নভেম্বর আপিল বিভাগও জামিন বহাল রাখে।