হতাশ হয়ে ইসিকে হুঁশিয়ার করে এলেন রানা দাশগুপ্ত

সরস্বতী পূজার কারণে ঢাকার সিটি ভোটের তারিখ পরিবর্তনের দাবি নিয়ে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ার করেছেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2020, 06:37 PM
Updated : 13 Jan 2020, 06:37 PM

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ভোটের তারিখ নির্ধারিত হলেও সেদিন সরস্বতী পূজা হওয়ায় তারিখ বদলাতে নানা মহল থেকে ইসিকে দাবি জানানো হচ্ছে।

এই দাবিতে ইসির সাড়া না পেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন হয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদেশ আসবে আদালতের। ইসি এখন সেই আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে।

তার একদিন আগে সোমবার ওই দাবি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে নানা যুক্তি তুলে ধরেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থী’ নামে আরেকটি সংগঠনও একই দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়ে আসে।

নির্বাচন ভবনে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলেছে। তারা তাদের অবস্থানেই রয়েছে। আমরা সুখকর কোনো সংবাদ পাই নি; হতাশ মনে ফিরে যাচ্ছি।

“যদি তারিখ পরিবর্তন করা না হয়, আর যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তার দায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।”

রানা দাশগুপ্ত বলেন, রংপুর উপনির্বাচন হয়েছে দুর্গা পূজায়। এবার সিটি ভোট করছে সরস্বতী পূজায়।

“এগুলো একই সূত্রে গাঁথা। হিন্দু সম্প্রদায় রংপুর উপনির্বাচন বর্জন করেছে। এবারও পূজায় ভোটের তারিখ নির্ধারণে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়নি।”

তিনি জানান, রিট আবেদন হওয়ায় এখন আদালতের আদেশ পেলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে বলে ইসি তাদের জানিয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীরও সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি রিট আবেদন হয়েছে। আদালত যে নির্দেশনা দেবে কমিশন সেই সিদ্ধান্তই নেবে।”

তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়েছিলেন। সরকারি ক্যালেন্ডারে সরস্বতী পূজার ঐচ্ছিক ছুটি ২৯ জানুয়ারি, ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার, আবার ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা।

আয়কর বিবরণী ওয়েবসাইটে চায় সুজন

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের আয়কর বিবরণী ও কর পরিশোধের তথ্য নির্বাচন কমিশনের  ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।

বিকালে সিইসির কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

তিনি জানান, ইসির ওয়েবসাইটে জাতীয় নির্বাচনসহ আগের সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সিটি ভোটের প্রার্থীদের আয়কর বিবরণী ও কর পরিশোধের তথ্য দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি এখনও সব ওয়ার্ড, বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধিকাংশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের তথ্যও প্রকাশ করা হয়নি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সব ধরনের তথ্য পেন ড্রাইভ/সিডি বা ফটোকপির মাধ্যমে সংগ্রহ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বলে জানান দিলীপ। এখন তাই দ্রুত তা ওয়েবসাইটে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তিন কপি করে হলফনামা, সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী, আয়কর রিটার্ন এবং কর পরিশোধের প্রমাণপত্রের কপি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে। এছাড়া প্রার্থীদের বিভিন্ন তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।