অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং নিয়ে হাই কোর্টের রুল

অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং চিহ্নিত করে প্রতিবন্ধক দিতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ লেভেল ক্রসিং বন্ধের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্টে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 11:30 AM
Updated : 15 Dec 2019, 12:17 PM

চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, রেল সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, রেলের মহাপরিচালক ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববারিএ রুল জারি করে।

পাশাপাশি নিরাপদ রেল চলাচল নিশ্চিত করতে অবৈধ লেভেল ক্রসিং বন্ধ ও বৈধ লেভেল ক্রসিং চিহ্নিত করে প্রতিবন্ধক দেওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেছে আদালত।  

তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ওই প্রতিবেদন দিতে হবে।

আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য তুলে ধরে গত ২৪ নভেম্বর হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী।

আবেদনে বলা হয়, গত বছর রেল সংক্রান্ত ২৩৫টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জনের প্রাণহানী ঘটেছে, আহত হয়েছে ২২৮ জন।

তার আগের বছর ২০১৭ সালে ২১১টি রেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জনের মৃত্যু ও ১৫৫ জন আহত হয়।

গত ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জের উল্লাপড়ায় বরকনেসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয় ৫ জন।

গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ রেলওয়ের দেওয়া তথ্যমতে সারাদেশে  রেলওয়ের ১ হাজার ৪১২টি রেল ও লেভেল ক্রসিং আছে। তার মধ্যে ৪৬৬টি লেভেল ক্রসিংয়ে গেইটম্যান আছে। ৯৪৬টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত।

রেলওয়ের পূর্ব জোনে ৪৩৪টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২৫৫টিতে গেইটম্যান আছে, বাকিগুলো অরক্ষিত। আর পশ্চিম জোনের ৯৭৮টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২১১টিতে গেইটম্যান থাকলেও বাকিগুলো অরক্ষিত।

আইনজীবী একলাছ উদ্দিন বলেন, ১৮৯০ সালের বাংলাদেশ রেলওয়ে আইনের ১৩, ১৪ ও ১২৮ ধারা অনুযায়ী রেলওয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ করে লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে ক্রসিং ঘিরে বা ক্রসিংয়ের দুই পাশে প্রতিবন্ধক দেওয়ার কথা থাকলেও সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

“বৈধ-অবৈধ রেভেল ক্রসিংয়ের সাথে রেলওয়ে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সরকারের নয়টি বিভাগের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। দুর্ঘটনা, প্রাণহানীর এসব তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে গত ১৬ জুলাই সংশ্লিষ্টদের উকিল নোটিস পাঠানো হয়।

“কিন্তু দুর্ঘটনা এড়াতে বা রেলওয়েকে নিরাপদ করতে তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তাই রিট আবেদনটি করা হয়েছে।”