পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দিল্লি সফর বাতিল

দিল্লি ডায়ালগ ও ইন্ডিয়ান ওশান ডায়ালগ উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের ভারত সফর হঠাৎ করেই বাতিল করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2019, 11:24 AM
Updated : 12 Dec 2019, 11:55 AM

ভারতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত এল, যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সফর বাতিলের কারণ হিসেবে বিজয় দিবস সামনে রেখে দেশে মন্ত্রীর ব্যস্ততার কথা বলেছে।

তিন দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লি ডায়ালগ (একাদশ চ্যাপ্টার) এবং ইন্ডিয়ান ওশান ডায়ালগের (চতুর্থ চ্যাপ্টার) যৌথ অধিবেশনে মন্ত্রী-পর্যায়ের সভায় অংশ নিয়ে বক্তৃতা করার কথা ছিল তার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বরে আমাদের বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান রয়েছে। সেজন্য তার দেশে থাকা জরুরি। সেজন্য তিনি সফর বাতিল করেছেন।”

তিনি বলেন, জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম মাদ্রিদে যাচ্ছেন। আর ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানির কারণে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক রয়েছেন নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে।

এ পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এবারের দিল্লি সফরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস উইংয়ের মহাপরিচালক ফেরদৌসী শাহরিয়ার।

মোমেন সোমবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি দিল্লি যাচ্ছি। সেখানে ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানে আমি ‘কী নোট স্পিকার’ হিসেবে বক্তব্য রাখব।”

ভারতের নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি সহনশীল দেশ। যারা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে, এবং সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের যে ঐতিহাসিক অবস্থান, সেটা দুর্বল হবে বলে আমি মনে করি।”

লোকসভায় বিল তুলতে গিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তার অনেকগুলো সঠিক নয় বলে দাবি করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যে কথা উঠেছে, এটার অনেকগুলো ঠিক না। আমাদের দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অনেক বেশি, আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সকলের। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের লোক কেউ নিপীড়িত না।”

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রতিবাদে দুদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে। বৃহস্পতিবারও সেখানে কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় নেমেছে হাজারো জনতা।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইটে আসামের জনগণকে আশ্বস্ত করে লিখেছেন, “আপনাদের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।”