সু চির ’দিব্যজ্ঞানের’ আশায় মোমেন

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যার পক্ষে অং সান সু চির অবস্থানকে দুঃখজনক মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, তার বিশ্বাস এই নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীর ‘দিব্যজ্ঞান’ ফিরবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2019, 04:14 PM
Updated : 11 Dec 2019, 04:19 PM

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা খুব দুঃখজনক। আমার সব সময় বিশ্বাস, উনার দিব্যজ্ঞান হবে এবং উনি যে অবস্থান নিয়েছেন তার থেকে উনি সরে পড়বেন।”

যে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম করেছিলেন, তাদের হত্যা-নির্যাতনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বক্তব্য দেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

গাম্বিয়ার মামলার জবাবে রাখাইন রাজ্যের গণহত্যা নিয়ে বুধবার আদালতে তার বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এর আগে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে বৈঠক হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের।

বন্দি থাকা অবস্থায় সু চির মুক্তি দাবিতে রাস্তায় দাঁড়ানোর কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি মোমেন বলেন, “সু চিকে মুক্ত করার জন্য আমি রাস্তায় বিক্ষোভ করেছি, একাধিকবার। শি ওয়াজ অ্যান আইকন অব ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস। উনার এই অধঃপতন হয়েছে, আমার খুব দুঃখ লেগেছে।”

”আপনারা দেখেছেন, গত সাতজন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী তাকে বলেছেন, সে যেন সত্য বলে। যাই হোক, এটা খুব দুঃখজনক।”

বিচারে বাংলাদেশের চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রথমত চাই, মিয়ানমারের যেসব লোক আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা স্বদেশে গিয়ে সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করুক। আমরা চাই, এই ধরনের দুর্ঘটনা, নির্যাতন আর কখনো হবে না। এজন্য জবাবদিহি দরকার।”

ভারতের ঐতিহাসিক অবস্থান ‘দুর্বল হবে’

নাগরিকত্ব বিলের মাধ্যমে ’ধর্মনিরপেক্ষতার’ পক্ষে ভারতের যে ঐতিহাসিক অবস্থান, তা দুর্বল হবে বলে মন্তব্য করেন আবদুল মোমেন।

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি সহনশীল দেশ। যারা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে, এবং সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের যে ঐতিহাসিক অবস্থান, সেটা দুর্বল হবে বলে আমি মনে করি।”

লোকসভায় বিল তুলতে গিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তার অনেকগুলো সঠিক নয় বলে দাবি করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ”আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যে কথা উঠেছে, এটার অনেকগুলো ঠিক না। আমাদের দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অনেক বেশি, আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সকলের। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের লোক কেউ নিপীড়িত না।”

মোমেন আরও বলেন, “উনারা যে তথ্য দিয়েছেন, বাংলাদেশে লোকজন নির্যাতিত হচ্ছে, কথাটা সত্য না। যারা তথ্যটা নিয়েছে, উনাদের যারা বুঝিয়েছেন, ওনারা সত্য কথা বলেন নাই। আমরা এজন্য বলি, আমাদের দেশে সংখ্যালঘু বলতে নয়, সবাই বাঙালি।”

বাংলাদেশে মুসলমানদের বাইরে যারা আছে, তারা এ বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।