নুসরাত হত্যা: হাই কোর্টে ডেথ রেফারেন্স

ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশের ডেথ রেফারেন্স উচ্চ আদালতে পৌঁছেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2019, 01:03 PM
Updated : 29 Oct 2019, 01:03 PM

মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে ডেথ রেফারেন্সের অনুলিপি এসে পৌঁছায় বলে সাংবাদিকদের জানান সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান।

ডেথ রেফারেন্সের শুনানি দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বিকালে ডেথ রেফারেন্স পৌঁছার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মামলাটি যাতে তাড়াতাড়ি শেষ করা যায়, সেজন্য আমার পক্ষ থেকে যত রকম পদক্ষেপ নেওয়ার সবই নেব।”

দ্রুত শুনানির বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “পেপারবুক প্রস্তুতসহ কতগুলো প্রক্রিয়া আছে। আর পেপরবুক তৈরি হয়ে যাওয়ার পর অন্যান্য যেসব ডেথ রেফারেন্স আছে, শুনানির অপেক্ষায় সেগুলোকে বাদ দিয়ে অগ্রধিকারভিত্তিতে কোনো ডেথ রেফারেন্স শুনানি করার জন্য একটা আলাদা দরখাস্ত করতে হয়। এ মামলার ক্ষেত্রে প্রয়োজেন আমরা সেটি করব।”

এর আগে দুপুরে পুলিশি নিরাপত্তায় ফেনীর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অফিস সহকারী শামসুদ্দিন ডেথ রেফারেন্সের কপি নিয়ে ঢাকায় রওনা হন।

রায় ঘোষণার সাত কার্যদিবসের মধ্যে ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য উচ্চ আদালতে পাঠানোর বিধান রয়েছে।

ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় ওই মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে গত বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ড দেয় ফেনীর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া আদালত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা (৫৭), নূর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), পৌর কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে সম্পা ওরফে চম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মাদ্রাসার সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেয় তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাই কোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মামলার সকল নথি হাই কোর্টে পাঠিয়ে দেয়, যা ‘ডেথ রেফারেন্স’ নামে পরিচিত।

ওই নথি আসার পর হাই কোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।