আইসিসি সাকিবকে শাস্তি দিলে বেশি কিছু করার নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সাকিব আল হাসানের পাশেই থাকবে, তবে আইসিসি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বেশি কিছু করার থাকবে না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2019, 10:50 AM
Updated : 29 Oct 2019, 03:53 PM

ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে সরকারপ্রধানের এ মন্তব্য আসে। 

ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর তা গোপন করার অভিযোগে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে থাকার একটি খবর মঙ্গলবার প্রকাশ করে দৈনিক সমকাল।

ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির পক্ষ থেকে সাকিবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা তখনও আসেনি।

সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সরকার এ বিষয়ে সাকিবের পাশে থাকবে কি না। 

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিসিবি যে সাকিবের পাশে থাকবে সে কথা সমকালের ওই প্রতিবেদনেই এসেছে।

আইসিসির নিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনো অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া হলে খেলোয়াড়দের তা আইসিসিকে সঙ্গে সঙ্গে জানানোর কথা। 

“ওর (সাকিব) সাথে যখন যোগাযোগ করেছিল ও গুরুত্ব দেয়নি, আইসিসিকে জানায়নি। নিয়ম হল সঙ্গে সঙ্গে জানানো। এখন আইসিসি যদি ব্যবস্থা নেয়, খুব বেশি কিছু তো আমাদের করার থাকে না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা ভুল সে করেছে এটা ঠিক, এটা সে বুঝতেও পেরেছে। বিসিবি বলেছে তার পাশে তারা থাকবে।”

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পরপরই সাকিবের উপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত আইসিসি জানায়। দুই বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়লেও দোষ স্বীকার করায় এক বছর পরই মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার। 

কেন এই ধর্মঘট

ভারত সফরের আগে ১৩ দফা দাবিতে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, “ক্রিকেট প্লেয়ারদের এই যে ধর্মঘট, হঠাৎ করে তাদের ধর্মঘট ডাকা, আসলে তাদের যদি কোনো দাবি দাওয়া থাকত, তারা কিন্তু বিষয়টা পূর্বেই জানাতে পারত। বিসিবিকে জানাতে পারত, বা যে কাউকে তারা জানাতে পারত। কিন্তু তারা কিন্তু সেটা করেনি। হঠাৎ করে কথা নেই বার্তা নেই, তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়ে বসল।”

ক্রিকেটাররা ধর্মঘট করে- এমন কথা জীবনেও শোনেননি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এই ধরনের ধর্মঘট করতে গেলে আগে তো দাবি দাওয়া উত্থাপন করে, নোটিস দেয়, সময় দেয়, তারপরে করে। সেটা তারা করেনি। 

“যাই হোক, পরবর্তীতে আপনারা দেখেছেন, তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে, তারা গেছে বোর্ডে, সেখানে আলোচনা করে ওই চ্যাপ্টারটা তো মিটমাট হয়ে গেছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে খেলোয়াড়দের সমর্থন দেয়, বিসিবি যেভাবে সহযোগিতা করে, পৃথিবীর খুব কম দেশেই ততটা দেওয়া হয়।

‘ক্রিকেটকে নদীতে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?’

বাংলাদেশ-ভারত আসন্ন টেস্ট সিরিজের একটি ম্যাচ হবে কলকাতায়। প্রধানমন্ত্রী খেলা দেখতে ভারতে যাবেন। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হতে পারে। সেক্ষেত্রে তিস্তা নিয়ে কোনো সুখবর আসতে পারে কি না- সেই প্রশ্ন রাখেন একজন সাংবাদিক।

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী রসিকতা করেই বলেন, “আপনি ক্রিকেটকে নদীতে নিয়ে যাচ্ছেন কেন। কোথায় ক্রিকেট, কোথায় নদী!”  

শেখ হাসিনা বলেন, সৌরভ গাঙ্গুলী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ফোন করে কলকাতা টেস্টের উদ্বোধনে অতিথি হওয়ার অনুরোধ করেন।

“সৌরভ গাঙ্গুলী বাঙালি ছেলে। ভালো ক্রিকেটার ছিল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে এই প্রথম কোনো বাঙালি সুযোগ পেল।… ফোন করেছিল, আমাকে দাওয়াত দিল যে আমি যেন যাই এবং খেলার শুরুতে যেন একটু থাকি। আমি রাজি হয়ে গেলাম।

“এটা কিন্তু প্রাইম মিনিস্টারের দাওয়াত না, মুখ্যমন্ত্রীরও দাওয়াত না। সৌরভ গাঙ্গুলী দাওয়াত দিয়েছে, আমি বলেছি আমি আসব।… তাদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা দেখব, তারপর বিকেলে চলে আসব। এইটুকুই ব্যাপার।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওখানে আমি ক্রিকেট খেলা দেখতে যাব। সেখানে আমি তিস্তা টিস্তা নিয়ে তিক্ততা সৃষ্টি কেন করব বলেন?”