রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজের সুরক্ষায় সংসদে বিল

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজের সুরক্ষায় নতুন আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য সংসদে বিল তোলা হয়েছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2019, 04:37 PM
Updated : 11 Sept 2019, 04:37 PM

নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বুধবার ‘বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) বিল-২০১৯’ সংসদে তোলেন।

পরে বিলটি পরীক্ষা করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

এ আইন পাস হলে সমুদ্রপথে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের অন্তত ৫০ শতাংশ পণ্য বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করতে হবে। ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশে ৪০ শতাংশ পণ্য  রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধান ছিল।

পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সামরিক আমলের আইনকে বাংলায় রূপান্তর করে নতুন আইনের এই বিলটি সংসদে তোলা হয়েছে।

কোনো জাহাজ এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে ওই জাহাজ কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানা করা যাবে। আগের অধ্যাদেশে জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা ছিল না।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ নয় এরূপ কোনো বিদেশি জাহাজ দিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে বালাদেশের বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন করা যাবে না।”

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ মালিকরা যেন আরও বেশি বেশি জাহাজ কিনতে বা সংগ্রহ করতে আগ্রহী হন সেজন্য নতুন আইনে সুরক্ষা সুবিধা হিসেবে এ নিয়ম রাখা হয়েছে।

“এর ফলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে এবং বাংলাদেশের জাহাজ মালিকরা বেশি বেশি জাহাজ সংগ্রহ বা ক্রয় করলে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য বিদেশি জাহাজ ভাড়া বাবদ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। বাংলাদেশি নাবিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।”

শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র বিল

শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এদিন ‘বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র বিল-২০১৯’ সংসদে উত্থাপন করেন।

পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

১৯৬২ সালের এ সংক্রান্ত ‘রেজ্যুলেশন’ বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি তোলা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, “কারিগরি প্রশিক্ষণের সাহায্যে দক্ষ জনবল তৈরি, গবেষণার দ্বারা শিল্প ক্ষেত্রে উদ্ভাবন, যন্ত্রাংশ তৈরি ও মেরামতপূর্বক শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপনের নিমিত্ত বিধান প্রণয়ন করে তা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় বাই-লজ দ্বারা পরিচালিত বাংলাদেশ শিল্প কারিগিরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) পরিচালনার জন্য ওই বাই-লজ রহিত করতে বিলটি সংসদে তোলা হল।”

মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) বিল পাস

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির পক্ষে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এদিন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বিল-২০১৯’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো, ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, “মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি এবং মাতৃভাষাশ্রয়ী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলনকে উৎসাহ দানের প্রেক্ষাপটে ইনস্টিটিউট ২০১৬ সালে ক্যটাগরি-২ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করেছে। ইউনেস্কো ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছে।“

ওই চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সচিব হবেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক। কিন্তু বিদ্যমান আইনে ইনস্টিটিউটের প্রধান এবং পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সচিব হচ্ছেন ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক।

এ কারণে ইউনেস্কোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির শর্ত পূরণ করতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের প্রধানের পদবি এবং পরিচালনা বোর্ডের গঠন-কাঠামো সংশোধন করে নতুন আইন করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।