গুলশান হামলা: ফের বাদীর সাক্ষ্য চায় রাষ্ট্রপক্ষ

গুলশানের হলি আটির্জান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় মামলার বাদীর জেরায় বাদ পড়া বিষয়গুলো নিয়ে পুনরায় তার সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন করতে চায় রাষ্ট্রপক্ষ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2018, 02:04 PM
Updated : 4 Dec 2018, 02:04 PM

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে বাদীর বক্তব্য তার জবানবন্দিতে আনতে পারেননি।

“এ কারণে ৯ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখে আমরা বাদ পড়া অংশগুলের জবানবন্দি শোনার জন্য বাদীকে পুনরায় তলব করব।”

সোমবার এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন মামলার বাদী গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তার জবানবন্দি উপস্থাপন করেন। পরে আসামি রাকিবুল হাসান রিগান এবং অন্য একজনের পক্ষে বাদীকে জেরা শুরু করেন আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান বেকারিতে পাঁচ তরুণের সরাসরি হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে জবাই ও গুলি করে হত্যা করা হয়।

পরদিন কমান্ডো অভিযানে নিহত হন হামলাকারী পাঁচ তরুণ - রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাজ ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির গত ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে জীবিত আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

‘চিহ্নিত’ বাকি ১৩ জন নজিরবিহীন ওই হামলার পর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, নব্য জেএমবির জঙ্গিরা ছয় মাস ধরে পরিকল্পনা করে ওই হামলা চালিয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, দেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করা, বাংলাদেশকে একটি ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ বানানো।

আসামিদের মধ্যে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে গত ২৬ নভেম্বর আলোচিত এ মামলার বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমান। সে অনুযায়ী সোমবার শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক প্রথম দিনের শুনানিতে দাবি করেন, গুলশানের ওই বেকারিতে সেই রাতে আসামিদের গুলিতে কেউ মারা যাননি; তারা মারা গেছেন পুলিশের বিভিন্ন শাখার সদস্যদের এলোপাতাড়ি গুলিতে।

সোমবার বাদীকে জেরার সময় আসামিপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, “এত উচ্চ পর্যায়ের সংরক্ষিত এলাকায় বিভিন্ন ধরনের আধুনিক ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আগ্নেয়াস্ত্র আনা অসম্ভব।”

এ মামলার আসামিদের মধ্যে নব্য জেএমবির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান ও হাদিসুর রহমান সাগর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি দুই আসামি শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন পলাতক।

২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী, ছয় মাসের মধ্যে এ মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।