ঘ ইউনিট: বিক্ষোভ চলছেই, কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2018, 05:09 PM
Updated : 21 Oct 2018, 05:12 PM

টিএসসির রাজু ভাস্কযের্র সামনে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের এক দল শিক্ষার্থীর সমাবেশ থেকে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিমের পদত্যাগ চাওয়া হয়।

এই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার আদেশ চেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদনও হয়েছে।

এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সমালোচনার মধ্যেই ফল প্রকাশের কারণ ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা বলছে, ফল প্রকাশ হলেও ভর্তির সময় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তিতে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিলেও গত মঙ্গলবার ফল প্রকাশ করেছে।

তারপর থেকে বিভিন্ন ব্যানারে চলছে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

রোববার বিকালে 'প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী। 

সমাবেশে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাত বলেন, “প্রশাসন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। আমাদের দাবি পরিষ্কার, 'ঘ' ইউনিটের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নিতে হবে, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিমকে পদত্যাগ করতে হবে, প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।"

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত অন্তর বলেন, “প্রশ্নফাঁসের সাথে প্রশাসন সরাসরি জড়িত। ঢাবি প্রশাসনে যারা আছেন সবাই আমদের শিক্ষক। কিন্তু যারা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েও চেয়ারে বসে থাকে, তাদের কাছে আমরা কী শিখব?”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু রায়হান খান বলেন, “পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, অথচ ঢাবির  শিক্ষার্থীরা গর্ব করে বেড়ায়। প্রশ্ন ফাঁসের দায় যতটা প্রশাসনের, ততটাই দায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। কারণ তারা প্রতিবাদ করছে না। আমি সকলের কাছে আহ্বান জানাই আপনারা প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।"

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথাসিদ্ধ রীতি’ অনুযায়ী ফল ঘোষণা হয়েছে।

“ফলাফল ঘোষণাকালে বলা হয়েছিল ‘ঘ’ ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডিন ভর্তি কার্যক্রম গ্রহণের সময় ফলাফল নিরীক্ষা, বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করবেন। কোনো ব্যত্যয় বা অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে ব্যবস্থা নেবেন এবং বৃহত্তর কোনো সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ প্রদান করলে সে আলোকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।”

‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় পরীক্ষার দিনই উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সে কমিটি ১৫ অক্টোবর উপাচার্যের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। 

“প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর প্রতিবেদনে পরিবেশিত ‘পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ’ এবং ‘সুপারিশ’ মোতাবেক ১৬-১০-২০১৮ তারিখ অপরাহ্ন ৩:৩০ ঘটিকায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ পাওয়ার পর সত্য উদঘাটন ও দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের করা মামলা ও মামলার ৬ আসামির গ্রেপ্তারের বিষয়টি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।