পুরান ঢাকার কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখে এসেছেন তার চিকিৎসায় সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
Published : 15 Sep 2018, 04:39 PM
শনিবার সকালে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের দেখতে যাওয়ার কথা থাকলেও তার সায় না পাওয়ায় যেতে পারেননি বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এরপর দুপুর গড়িয়ে বেলা বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেখা যায় মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের; যে কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।
এক ঘণ্টা পর বেলা ৪টা ৫০ মিনিটে বেরিয়ে আসেন বোর্ডের পাঁচ চিকিৎসক। তবে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে ২০/৩০ মিনিট স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। পরবর্তীতে তারা ব্যবস্থাপত্র দেবেন। সেই অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।”
সকালে কারাগারে গেলেও খালেদার দেখা না পাওয়ার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধাপক আবদুল জলিল তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমরা দেখা করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দেননি। এজন্য আমরা দেখা করতে পারিনি।”
এক প্রশ্নের জবাবে জেলার মাহবুবুল বলেন, চিকিৎসকদের সকাল ১১টায় আসার কথা ছিল। খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তে তারা বিকালে আসেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দেখা করে ৭৩ বছর বয়সী খালেদার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ জানানোর পর গত বৃহস্পতিবার এই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী এই বোর্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য সদস্যরা হলেন কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক হারিসুল হক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী, চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলী ও ফিজিকেল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ।
বিএনপি ইতোমধ্যে এই মেডিকেল বোর্ড নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, সরকারের পছন্দ অনুযায়ী প্রতিবেদন তৈরির পরিকল্পনা থেকে ‘অনুগত ও পছন্দের লোকদের’ দিয়ে এই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
বিএনপি তাদের নেত্রীকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে বিএসএমএমইউ কিংবা সিএমএইচে ভর্তির প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা গ্রহণ করেননি খালেদা।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড ঘোষণার পর থেকে খালেদা কারাগারে। তাকে ছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা রয়েছে বিএনপির।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেছেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি ‘রাজনীতি’ করছে।