শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের এক আলোচনা সভায় বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান এই প্রশ্ন তুলেন।
তিনি বলেন, “সরকারের ফরমায়েশ অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে। সিনিয়র চিকিৎসকরা যারা ভালো ট্রিটমেন্টের ব্যাপারে সাজেশন দিতে পারেন, পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, তাদেরকে দিয়ে করা হয় নাই।
“খুঁজে খুঁজে তাদের যারা বিশ্বস্ত, তাদের কথায় কাজ করবে তাদের দিয়ে করা হয়েছে।”
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বৃহস্পতিবার পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে সরকার। বোর্ডের সদস্যরা হলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিনের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী, কার্ডিওলজির অধ্যাপক হারিসুল হক, অর্থোপেডিক সার্জারির অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী, চক্ষুর সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলী ও ফিজিক্যাল মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা শনিবার বিকাল ৪টায় খালেদা জিয়াকে দেখতে কারাগারে যাবেন বলে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী রাজধানীর কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানায়।
এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড হবে।
কিন্তু যে পাঁচজনকে নিয়ে বৃহস্পতিবার মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে তাদের প্রত্যেককে নিয়ে আপত্তি জানান জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “চক্ষু বিভাগে প্রফেসর আছে তিনজন। কোনো প্রফেসরকে করে নাই। একজন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরকে করেছে। উনি কোনো একটা (আওয়ামী লীগ) উপ-কমিটির মেম্বার। আবার ফিজিক্যাল মেডিসিনে একজন নারী চিকিৎসককে করেছে। তার উপরে ৬ জন প্রফেসর আছেন, দুই নারী অধ্যাপকও আছেন। তাদের করা হয় নাই।”
জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের বাদ দিয়ে সরকারের বিশ্বস্ত লোকদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএসএমইউয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব ছিল জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা।
“কিন্তু ওই যে ভিসি কনক কান্তি বড়ুয়া, যিনি দীলিপ বড়ুয়ার ছোট ভাই এবং তাদের (সরকার) নিজস্ব লোক। তাদের ফরমায়েশ অনুযায়ী, তিনি মেডিকেল বোর্ড করেছেন। এখানে প্রফেশনালিজম কী থাকলো?
“আমরা আশা করব, চিকিৎসকের আইডেন্টিটি হবে চিকিৎসক। তিনি কোন দল করেন সেটা আমরা দেখবো না। চিকিৎসকের কাছে বড় পরিচয় উনি একজন রোগী, আমি একজন ডাক্তার। এঅবস্থা চলতে পারে না।”
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা সাইদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সভাপতি সাইদুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, লেবার পার্টির একাংশের সহসভাপতি সামসুদ্দিন পারভেজ ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।